তাজিয়া মিছিলে তিনস্তরের নিরাপত্তা: কমিশনার
মাসুদ আলম: পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসনি দালান থেকে এবার যে তাজিয়া মিছিল বের করা হবে তা ঘিরে তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হোসনি দালানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকের এসব কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
কমিশনার বলেন, গত বছর কোথায় ভুল ছিল, কোথায় কিসের অভাব ছিল, তা পর্যালোচনা করেছি। গতবার আমরা এতটা অর্গানাইডজ ছিলাম না। গত বছর তাজিয়া মিছিলে কোনো ধরনের বিধিনিষেধ ছিল না। কিন্তু এবার বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। শুধু নিরাপত্তার বিষয় মাথায় রেখে।
তিনি বলেন, হোসনি দালানের ইমাম বাড়াসহ যেসব স্থান থেকে তাজিয়া মিছিল বের হবে সেগুলোর জন্য সুদৃঢ়, নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চাংখারপুলে, হোসনি দালানের মূল ফটকে ও ভিতরে, এই তিন স্থানেই তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ম্যাটাল ডিটেক্টর থাকবে। আর্চওয়ের ভিতর দিয়ে সবাইকে প্রবেশ করতে হবে। কেউ কোনো ধরনের ধারালো অস্ত্র কিংবা পোটলা (ছোট ব্যাগ) বহন করতে পারবেন না। আমরা হোসনি দালান ইমাম বাড়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। এবার যেন তলোয়ার, ছুরি নিয়ে কেউ মিছিলে আসতে না পারে। নিশানের উচ্চতাও এবার ১২ ফুটের বেশি হবে না।
নিরাপত্তার বিষয়ে কমিশনার বলেন, এবার নিরাপত্তা জোরদার করার স্বার্থে তাজিয়া মিছিল ও শারদীয় দুর্গাপূজায় পটকা বা আতশবাজি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে এবার পুরো হোসনি দালান এলাকা সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। প্রত্যেকটি ভেন্যুতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। পোশাকে সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখবেন। থাকবে ডগ স্কয়াড। গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে থাকবে সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার টেন্ডার। হোসনি দালান কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত বাইরের কেউ মিছিলে আসতে পারবে না। যেসব এলাকাতে মিছিল হবে সেসব এলাকায় আগে থেকে পুলিশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে ও অবস্থান নেবে। ১০ মহররম ধানমন্ডিস্থ অস্থায়ী কারবালায় যাবেন ধর্মপ্রাণ শিয়া মুসলমানগণ। সেখানে যাতে অপ্রীতিকর কিছু না ঘটে সেজন্য সেখানেও নেওয়া হয়েছে নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সব ধর্মের মানুষ যাতে তাদের স্ব স্ব ধর্মীয় উৎসব পালন করতে পারেন সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বদ্ধপরিকর। হিজরি পঞ্জিকার ১০ মহররম মুসলিম বিশ্বে আশুরা পালিত হয়। এক হাজার ৩৩২ বছর আগে এই দিনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা.) ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে শহীদ হন। সম্পাদনা: শাহানুজ্জামান টিটু