অভিবাসীদের সহায় ‘ফ্রান্সের ভূগর্ভস্থ রেল’
পরাগ মাঝি: যুক্তরাষ্ট্রের কাগুজে মুদ্রায় স্থান হয়েছিল হ্যারিয়েট টাবম্যান নামে এক কৃতদাস মহিলার ছবি। দাসত্ব থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি আরও অসংখ্য কৃতদাসকে মুক্ত করেছিলেন ভূগর্ভস্থ রেলপথ ব্যবহারের মাধ্যমে।
কিন্তু কার্ডিক হ্যারো; ইনি আবার কে?
নিউইয়র্ক টাইমস-এর একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৩৭ বছর বয়সী কার্ডিকও হ্যারিয়েটের মতোই বিরামহীন নিভৃতে কাজ করছেন কিছু অসহায় মানুষের সহায় হয়ে। তিনি ইতোমধ্যে প্রায় ২০০ আফ্রিকান শরণার্থীকে সহযোগিতা করেছেন; যারা সুদান এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত কয়েকটি দেশ থেকে পালিয়ে ইতালিয়ান সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ফ্রান্সে প্রবশ করেছেন উন্নত জীবনের আশায়।
নিউইয়র্ক টাইমস কার্ডিক-এর এই সহযোগিতাকেই ‘ফরাসী ভূগর্ভস্থ রেল’ বলে চিহ্নিত করেছে। মূলত কার্ডিক এবং তার কয়েকজন লোক চোরাপথে আসা অভিবাসন প্রত্যাশীদের সাহায্য করতে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। তারা অভিবাসন প্রত্যাশীদের পুলিশের অবস্থান, খাবার এবং আশ্রয়ের খবর দেয়। এসব সহযোগিতার উপর ভিত্তি করে অভিবাসন প্রত্যাশীরা ফ্রান্সে প্রবেশ করে এবং সেখান থেকে অন্য কোনো দেশ বিশেষ করে ইংল্যান্ড ও জার্মানিতে প্রবেশ করে।
স্মাগলিং দলটির অন্য অংশের সহযোগী ফ্রান্সিস কোট্টা নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, ‘আমরা মনে করি, আমরা নাগরিক হিসেবে ঠিক কাজটাই করছি।’ কোট্টা একজন পারসিয়ান বংশোদ্ভূত আইনজীবী। তিনি ফ্রান্সের দক্ষিণের শহর ব্রেইল-সুর-রয়ায় কিছুদিন কাটিয়েছেন। এখানেই কার্ডিক তার কর্মকা- পরিচালনা করেন।
ব্রেইলের মেয়রও এই নেটওয়ার্কটি সম্পর্কে অবগত আছেন যদিও এ বিষয়ে তিনি কোনো পদক্ষেপ নেন না। হতে পারে এ ব্যাপারটি নিয়ে তার মাঝেও কিছুটা সহানুভূতি কাজ করে।
তবে, এ প্রক্রিয়ায় স্মাগলিং দলটিকে মাঝেমাঝেই পুলিশের মুখোমুখি হতে হয়। এমনটা ক্যাডরিচেরও কয়েকবার হয়েছে। পরে অবশ্য তার সহযোগীরা তাকে ছাড়িয়ে নিয়েছে। ক্যাডরিচ জানায়, কালো অভিবাসীদের পুলিশ প্রায় সময়ই ইতালিয়ান সীমান্তে আবার জোর করে ফেরত পাঠায়। সেখানে বিশাল আকারের শরণার্থী শিবির রয়েছে।
ক্যাডরিচ বলেন, আমি যখন চোখ বন্ধ করে ওইসব কাগজপত্রহীন অসহায় মানুষগুলোর কথা ভাবি, তখন বুঝি যে, তাদের কোনো সুরক্ষা নেই। এ অবস্থায় আমরা নিষ্ক্রিয় হতে পারি না। সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম