রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ জেএমবির এক নেতা আলমগীর সরকার। অপরদিকে জেএমবির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এমন সন্দেহে উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালামের দলীয় মনোনয়ন বাতিল করে নিশ্চিত জেএমবি নেতা আলমগীর সরকারকে মনোনয়ন দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। 
এবিষয়ে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, এ মনোনয়ন কে বা কারা দিয়েছে আমার জানা নেই। শুনেছি কেন্দ্র থেকে সরাসরি দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তবে এ মনোনয়ন আওয়ামী লীগের কেউ সমর্থন করে না। তিনি আরও বলেন, জঙ্গি সংগঠনের কোনো নেতা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে পারে না।
সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, বাগমারায় নির্বাচন না হওয়ায় কারো খুশি হওয়ার কিছু নেই। বরং ভোট বন্ধ হওয়ায় বাগমারার মানুষ কিছুটা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, বাগমারার দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আমার আস্থা আছে। তারা ঐক্যবদ্ধ। তিনি মনে করেন, দু’একজন ক্ষমতার লোভে দলের ভেতরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তারা সফল হবে না।
সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক আরও বলেন, মনোনয়ন পাওয়া আলমগীরের বাড়িতে জেএমবির মিডিয়া সেল ছিল। যেখানে জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাই সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করতেন। ওই বাড়িতে একাধিক গোপন বৈঠক করেছে। যার ভিডিওচিত্র বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
এ বিষয়ে আলমগীর বলেন, তৎকালীন পুলিশ সুপার মাসুদ রানার নির্দেশে জেএমবি নেতাদের তার বাড়িতে বৈঠক করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, ‘আপ্যায়নের জন্য আমি ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। জেএমবির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না।’ বড় ভাই রাজনীতি করতেন।
গত ৭ মে বাগমারা উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর দুইদিন আগে ৫ মে নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালান আবদুস সালাম। তবে সালামের বিরুদ্ধে জেএমবি-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠায় তার মনোনয়ন বাতিল করে আওয়ামী লীগ।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, এবার দলীয় মনোনয়নের জন্য জেলার কাছে কোনো তালিকা চাওয়া হয়নি। কেন্দ্র থেকে সরাসরি দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। আসাদ জানান, আলমগীর সরকারের বাড়িতে ২০০৪ সালে জেএমবি নেতাদের বৈঠক হতো তা সবাই জানে। তার ভিডিওচিত্র আছে। তাই গতবার তার নাম পাঠানো হয়নি। এবার তিনি কীভাবে দলীয় মনোনয়ন পেলেন তা জানা নেই। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জাহেদুল ইসলাম বলেন, ২০০৪ সালে আলমগীর সরকার ও তার বড় ভাই জাহাঙ্গীর সরকার জেএমবির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাদের বাড়িতে গোপন বৈঠক করে তালিকা তৈরি করা হতো। সে তালিকা অনুযায়ী জেএমবির সদস্যরা আওয়ামী লীগ কর্মীসহ এলাকার লোকজনকে ধরে নিয়ে নির্যাতন ও চাঁদা আদায় করতেন।