মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরায় আমন ও সবজিখেতের ক্ষতিকর পোকামাকড় দমনে বসানো হয়েছে আলোক ফাঁদ। পরিবেশবান্ধব ও খরচ কম হওয়ায় এই ফাঁদ প্রযুক্তি ব্যবহার বাড়ছে ও জনপ্রিয় হচ্ছে।
ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তা দমন করতে গত মাস থেকে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পার্থ প্রতীম সাহা বলেন, ‘কৃষি বিভাগের সহায়তায় চারটি উপজেলায় কৃষকরা ইতোমধ্যে ৫০টি ব্লকে আলোর ফাঁদ স্থাপন করেছেন। বাকি সব ব্লকে আলোর ফাঁদ তৈরির কাজ চলছে।’
কৃষকরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পর খেতের পাশে অথবা আইলে ফাঁদ হিসেবে বাতি জ্বালানো হয়। বাতির নিচে পাত্রে সাবান, ডিটারজেন্ট অথবা কেরোসিনমিশ্রিত পানি রাখা হয়। এরপর বাতির নিচে আগত পোকামাকড় গিয়ে পানিতে পড়ে।
সম্প্রতি মহম্মদপুর উপজেলা সদর ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আমনখেতের পাশে কয়েকটি আলোর ফাঁদ বসানো হয়েছে। ওই ফাঁদে পড়ে মরছে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়। জেলা কৃষি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সদর, মহম্মদপুর, শ্রীপুর ও শালিখা উপজেলায় এ বছর ৫৮ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হচ্ছে। এসব জমি ১০৯টি ব্লকে ভাগ করে আলোর ফাঁদ বসানোর কাজ চলছে। সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে এই ফাঁদ স্থাপনে সহযোগিতা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
আমন ধানে রোগবালাই ও পোকার আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। আর কয়েক দিন পর গাছে থোড় আসবে। এই সময়ে ধানে বাদামি ঘাস ফড়িং, সবুজ ঘাস ফড়িং, পাতামোড়ানো পোকা, গান্ধী পোকা ও মাজরা পোকাসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকা আক্রমণ করে। পোকার উপস্থিতি নির্ণয় করতে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে আমনখেতে আলোক ফাঁদ ব্যবহার শুরু করা হয়েছে। চলবে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত। কৃষি কর্মকর্তাদের সহায়তায় কৃষকরা জমিতে এই আলোক ফাঁদ স্থাপন করেছেন। এ মৌসুমে আলোক ফাঁদের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যাবে। শালিখা উপজেলার ধনেশ্বরগাতি ইউনিয়নের তিলখড়ি গ্রামের কৃষক রঞ্জিত বিশ্বাস ও মিলন মৃধা জানান, আমনখেতের জন্য ক্ষতিকর পোকা দমনে আলোর ফাঁদ ভালো কাজ দিচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের লোকজন আমন খেতে পোকামাকড় দমনে আলোর ফাঁদ বসানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। সম্পাদনা: তারেক