দেলওয়ার হোসাইন: ৩ হাজার ৪৬৭ জন কর্মজীবীশিশু ও পথশিশু মাত্র ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খুলেছে। এরপর তারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়ে সম্মিলিতভাবে ব্যাংকে জমা করেছে ২২ লাখ ৮ হাজার ৮৪৮ টাকা। দেশের ১৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংকে তাদের এ টাকা জমা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
পথভ্রষ্টতা থেকে রক্ষার জন্য পথশিশুদের ব্যাংক হিসাব খোলার উদ্যোগ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নির্দেশনার মাধ্যমে মাত্র ১০ টাকা দিয়ে পথশিশুদের ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ তৈরি হয়। নির্দেশনার পর ব্যাংকগুলো বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় কর্মজীবী ও পথশিশুদের হিসাব খোলার উদ্যোগ নেয়। আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাংক হিসাব খোলার কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৪ সালের ৩১ মে। এ বিষয়ে সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, পথশিশুরা তাদের কষ্টে উপার্জিত অর্থ মাথার নিচে ইটচাপা দিয়ে রাখে। বিভিন্ন সময় তাদের এ টাকা হারিয়ে যায়। ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ পাওয়ায় তাদের টাকা নিরাপদে থাকবে। এজন্যই তাদের ব্যাংক সেবার আওতায় আনায় হয়। আতিয়ার রহমান বলেন, কঠিন সময়ে উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছিল। প্রথমে পথশিশুদের অভিভাবক না থাকায় ব্যাংকগুলো এ হিসাব খুলতে রাজি হচ্ছিল না। পরে এনজিও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হিসাব খোলার ব্যবস্থা করা হয়। হিসাব খোলার সময় সংশ্লিষ্ট পথশিশু এবং এনজিও প্রতিনিধি উভয়ের সই নেওয়া হয়েছে।
সাবেক এ গভর্নর বলেন, ব্যাংক হিসাব খোলা পথশিশুদের বয়স ১৮ বছর হলে তারা ব্যাংক থেকে জামানতবিহীন ঋণ সুবিধা পাবে। যা দিয়ে তারা ছোটখাটো ব্যবসা করতে পারবে। সাড়ে ৭ লাখ পথশিশুর মধ্যে মাত্র সাড়ে ৩ হাজারের মতো ব্যাংক হিসাবের আওতায় এসেছে। বাকি শিশুদেরও ব্যাংক সেবার আওতায় আনতে হবে। সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে ব্যাংকগুলোর উচিত এসব শিশুকে ব্যাংকসেবার আওতায় এনে উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ার সুযোগ করে দেওয়া।
উল্লেখ্য, প্রাথমিকভাবে ১০টি ব্যাংক কর্মজীবী ও পথশিশুদের ব্যাংক হিসাব খোলার ব্যবস্থা করে। পরে আরও ৭টি ব্যাংক এ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়। ব্যাংকগুলো হলো- সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, দ্য সিটি ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি