বদরুল-কা-ে বেকায়দায় শাবি ছাত্রলীগ
বিপ্লব বিশ্বাস : সিলেটে খাদিজা আক্তার নার্গিস নামের এক কলেজছাত্রীর উপর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলমের হামলার ঘটনায় সারাদেশে বইছে নিন্দার ঝড়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাইটগুলোতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশাজীবীর মানুষ বদরুলের শাস্তি দাবির পাশাপাশি শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এছাড়া সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে ছাত্রলীগকে কাঠগড়ায় তুলছেন। এনিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়েছেন শাবি ছাত্রলীগের নেতারা। শুরুতে স্পষ্টভাবে বদরুলকে নিজেদের পদধারী নেতা হিসেবে স্বীকার না করলেও, এখন তারা তাকে ছাত্রলীগের একজন পদধারী নেতা বলতে শুরু করেছেন। তবে ছাত্রী হামলার দায়কে সাংগঠনিকভাবে নিতে না চাইলেও একে বদরুলের ব্যক্তিগত নৃশংসতা বলাতেই অটল রয়েছেন তারা।
জানাগেছে, ২০১৩ সালের ৮ মে শাবি ছাত্রলীগের সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটিকে পূর্ণাঙ্গরূপ দেওয়া হয় এর মেয়াদ পেরোনোর পর। ২০১৬ সালের ৮ মে ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয় বদরুল আলমকে। ২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারি শিবিরের হামলার ঘটনায় পন্ড হওয়াকেই বদরুলের একমাত্র যোগ্যতা হিসেবে ধরে নিয়ে তাকে পদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে সে সময় তিনি ছাত্রলীগের তৎকালীন আহ্বায়ক শামসুজ্জামান চৌধুরী সুমনের অনুসারী ছিলেন। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক পদ পাওয়ার পর শামসুজ্জামান চৌধুরী সুমন ক্যাম্পাস ছাড়লে বর্তমান শাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থের অনুসারী হন। ওই সময় শিবিরের হামলায় বদরুল আহত হওয়ার ঘটনায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ছাত্রলীগের কিছু নেতাও তাকে দেখতে গিয়েছিলেন। তবে কলেজছাত্রীর উপর হামলার ঘটনার পর এ বিষয়টিকে প্রথমে পুরোপুরিভাবেই চেপে গিয়েছেন শাবি ছাত্রলীগের নেতারা।
বর্তমান পরিস্থিতিতে শাবি ছাত্রলীগ এতটাই টালমটাল যে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে একটি বিবৃতি দেয়া ছাড়া আর কোনো কর্মসূচিই হাতে নিতে পারছে না। বিভিন্ন সময়ে দেশে নানা হামলার ঘটনায় তারা মিছিল-সমাবেশ করলেও বদরুল ইস্যুতে তারা একেবারে নিশ্চুপ। শাবি ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন থাকায় বদরুল কা-ে নিজেদেরকে জড়াতে চাচ্ছেন না তারা। এমনকি বদরুলকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না তারা। সিলেটের আওয়ামী লীগের নেতারা খাদিজা আক্তারের বাড়িতে গিয়ে শোকাহত পরিবারকে সান্ত¡না জানালেও শাবি ছাত্রলীগের কোনো নেতা এখনো পর্যন্ত তাদের দেখতে যাননি।
এ বিষয়ে শাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ বলেন, আমার অনুসারী বলে কোনো কথা নেই, আমরা সবাই বঙ্গবন্ধুর অনুসারী। বদরুল এক সময় ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তবে এখন সে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত। সে যে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে, এটা তার ব্যক্তিগত নৃশংসতা। এতে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত। শাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান বলেন, বদরুল ছাত্রলীগ করতো, এখন সে শিক্ষকতা পেশায় জড়িত। বদরুলের বিচার চান কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা তার সর্বোচ্চ বিচার দাবি জানাই। সম্পাদনা : নূরুল ইসলাম