মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা হিলারি ৮২%, ট্রাম্প ১৮%
গত দুসপ্তায় যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মাঝে রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়নির্ধারণী ৪টির তুলনায় ডেমোক্রেটিক হিলারি ক্লিনটনের সমর্থন ১২টিতে থাকায় কোনো বিপর্যয় না ঘটলে বারাক ওবামার উত্তরসূরী এবং প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হবেন হিলারি। এটির বিশ্লেষণ টেনেছে আন্তর্জাতিক নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার ‘আপশট ইলেকশন মডেল’। তাতে প্রত্যেক অঙ্গরাজ্যে ভোট প্রদানের গতিপ্রকৃতি এবং সর্বশেষ খসড়াভাবে ৩০০টি অঙ্গরাজ্য ও জাতীয়ভিত্তিক জরিপ ফলাফলকে উপাত্ত ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে রাজ্যসমূহের মোট ৫৩৮টি ‘ইলেকট্রোরাল ভোট’-এর মাঝে হিলারি ক্লিনটনের সংখ্যাধিক্য বিজয়ে প্রয়োজনীয় ২৭০টি চৌদ্দটি অঙ্গরাজ্যসহ রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির ‘ডিস্ট্রিক অব কলাম্বিয়া’ থেকে ১৯১টি সুনিশ্চিত হয়েছে। পাশাপাশি মিনেসোটা, মিশিগান ও পেনসেলভেনিয়াসহ অপর আটটি অঙ্গরাজ্যে ‘অতিরিক্ত আভাস’ থাকায় হিলারির বিজয়ে তা হবে ২৮০।
ওই ‘আপশট ইলেকশন মডেল’-এ ২০১২ সালে বিজয়ী ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান মিট রমনি পৃথকভাবে যেসব অঙ্গরাজ্যে ১০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছেন, সেখানে ‘ইলেকট্রোরাল ভোট’ হচ্ছে যথাক্রমে ১৯১ ও ১৫৪ এবং বাকি ১৫টি মীমাংসাসূচক ‘ইলেকট্রোরাল ভোট’। এগুলোই ২০১৬ সালের নভেম্বরে হিলারি ক্লিনটনের বিজয়ে বিশেষভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে ‘ইলেকট্রোরাল ভোট’ভিত্তিক প্রথম সারির তেরোটি অঙ্গরাজ্য হচ্ছে- মিনেসোটা ১০, ভার্জিনিয়া ১৩, পেনসেলভানিয়া ২০, মিশিগান ১৬, নিউ হ্যামশায়ার ৪, ফ্লোরিডা ২৯, নর্থ ক্যারোলাইনা ১৫, উইসকনসিন ১০, ওহাইয়ো ১৮, অ্যারিজোনা ১১, আইওয়া ৬, জর্জিয়া ১৬ ও মিসৌরি ১০। এক্ষেত্রে ৮৬-৯৪ শতাংশ সমর্থনে হিলারি নিশ্চিত এগিয়ে রয়েছেন যথাক্রমে নিউ হ্যামশায়ার, পেনসেলভানিয়া, মিশিগান, মিনেসোটা ও ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে। আর ৫২-৯৩ শতাংশ সমর্থন পেয়ে ট্রাম্প এগিয়ে রয়েছেন যথাক্রমে ওহাইয়ো, আইওয়া, অ্যারিজোনা, জর্জিয়া ও মিসৌরি অঙ্গরাজ্যে। পাশাপাশি ৬০-৮০ শতাংশ সমর্থন নিয়ে হিলারির পক্ষে এসেছে নর্থ ক্যারোলিনা, ফ্লোরিডা ও উইসকনসিন অঙ্গরাজ্য।
তবে গত দুসপ্তায় যে ১৬টি অঙ্গরাজ্যে সমর্থনের ভিন্নমাত্রা পরিলক্ষিত, তাতে সাউথ ক্যারোলাইনা ৯, আলাস্কা ৩, টেক্সাস ৩৮ এবং নেব্রাস্কা ৫ ‘ইলেকট্রোরাল ভোট’সংবলিত অঙ্গরাজ্যগুলোয় ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে সমর্থন বেড়েছে খুবই ধীর গতির অর্থাৎ সর্বোচ্চ ৪-৬ শতাংশ। আবার হিলারি ক্লিনটনের পক্ষে একমাত্র ২০, ৬, ৫, ৪, ৯ ও ১৮ ‘ইলেকট্রোরাল ভোট’সংবলিত পেনসেলভানিয়া, আইওয়া, নিউ মেক্সিকো, মেইন, কলোরাডো এবং ওহাইয়ো অঙ্গরাজ্যে যথাক্রমে ১-৮ শতাংশ বাড়ার পাশাপাশি রোড আইল্যান্ড ৪, ফ্লোরিডা ২৯, নর্থ ক্যারোলাইনা ১৫, মিশিগান ১৬, ডেলাওয়ার ৩ এবং নেভাডা ৬ ‘ইলেকট্রোরাল ভোট’সংবলিত রাজ্যে সমর্থন বেড়েছে ৯-১২ শতাংশ পর্যন্ত।
এতে যে জরিপ ফলাফলগুলো মুখ্য ভূমিকা রেখেছে, সেখানে হিলারি-ট্রাম্প যথাক্রমে পেয়েছেন- রাসমুসেন ৪১-৪২, ইউগভ-ইকোনমিস্ট ৪৩-৪০, ইপসোস-রয়টার্স ৪৪-৩৭, মর্নিং কনসাল্ট ৪৬-৩৯, সিএনএন ৪৭-৪২, সিবিএস নিউজ ৪৯-৪৩, ফেয়ারলি ডিকিনসন/এসএসআরএস ৫০-৪০, পাবলিক রিলিজিওন রিসার্চ ৪৭-৪১, ইউপিআই/সিভোটার ৪৭-৪৯ এবং এনবিসি নিউজ/সার্ভেমাঙ্কি ৫০-৪৪ শতাংশ। তাতে একমাত্র রাসমুসেন ও ইউপিআই/সিভোটার-এর জরিপে ট্রাম্প এগিয়ে রয়েছেন মাত্র ১-২ শতাংশ এবং পাল্টা সবগুলো জরিপে হিলারি এগিয়েছেন ৫-১০ শতাংশ।
ফলে ওই ‘আপশট ইলেকশন মডেল’-এ হিলারি ৮২% ও ট্রাম্প ১৮% বিজয় সম্ভাবনাটি দাঁড়িয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বীদের জাতীয় জরিপে সর্বশেষ নির্দেশিত গড়পড়তা ফলাফল যথাক্রমে ৪৫ এবং ৪১ শতাংশ সমর্থনের ভিত্তিতে। একইসঙ্গে হিলারি ক্লিনটনের বিজয়ে ‘অতিরিক্ত আভাস’ হিসেবে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ‘ইলেকট্রোরাল ভোট’টি মুখ্য বিবেচ্য হলেও ক্যালিফোর্নিয়া ৫৫, ইলিনয় ২০, নিউইয়র্ক ২৯ এবং টেক্সাসের ৩৮টি ‘ইলেকট্রোরাল ভোট’ নির্ধারক চালিকা হতে পারে, যদি না সেখানে অপরাপর অঙ্গরাজ্যের প্রয়োজনীয় ভোট সংগৃহীত হয়। সে পর্যন্ত অপেক্ষার পালা।