লিহান লিমা: ৬৮ দিন স্বেচ্ছায় অনশন করে মারা গেছে ভারতের হায়দ্রাবাদের ১৩ বছরের কিশোরী আরাধনা। জৈন ধর্মমতে স্বর্গ লাভের জন্য ‘চৌমাসা’ বা ‘সান্থারা প্রথা’ পালন করে অষ্টম শ্রেণির এই কিশোরী। ১০ সপ্তাহের অনশন শেষ করে আরাধনা হাসপাতালে ভর্তি হলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
সবচাইতে নির্মম বিষয় হলো, কিশোরী আরাধনার এই আত্মাহুতিকে তার এলাকার মানুষ গ্রহণ করেছে ধর্মীয় উৎসব হিসেবে। আরাধনার মৃত্যুর পরে তাকে ‘বাল তপস্বী’ আখ্যা দিয়ে প্রায় ৬ হাজার মানুষ তার শেষকৃত্যে অংশ নেয়। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া
সেকান্দারবাদের পটবাজারে আরাধনার পরিবারের সোনার গহনার ব্যবসা আছে। প্রশ্ন উঠেছে,সদ্য কিশোরীকে তারা কেন অনশনের অনুমতি দিল? জৈন সম্প্রদায়ের একজন সদস্য লাটা জৈন বলেন, জৈন ধর্মে এই ধরনের উপাচার অনেকেই করেন এবং সমাজে তাদের অনেক সম্মান করা হয়। কিন্তু এটি বয়স্ক লোকেরা করেন আর আরাধনা মাত্র ১৩ বছরের কিশোরী। যদি এটি হত্যা না হয় এটি আত্মহত্যা।
সূত্র জানায়, আরাধনা এর আগেও ৪১ দিন অনশন করেছে।
আরাধনার দাদা মানিকচাঁদ সমাধারিয়া বলেন, ‘আমরা কিছু লুকোইনি। সবাই জানে যে, আরাধনা অনশন করেছে। অনেকেই আরাধনার সঙ্গে দেখা করে সেলফি তুলেছে। অনশন চলাকালীন শীর্ণ আরাধনাকে বিয়ের কনের মতো সাজিয়ে বরণ করা হয়েছে। তেলাঙ্গানার মন্ত্রী এটি নিয়ে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। এবং স্থানীয় বিধায়ক বিবি পাতিল আরাধনার ‘সান্থারা’ হওয়া নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।
শিশু অধিকার কর্মী সান্তা সিনহা পুলিশকে বলেন, এই মামলা অবশ্যই নিবন্ধিত করতে হবে এবং শিশু অধিকার কর্মীদের এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একটি ছোট্ট মেয়ে কখনই তার জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। ধর্মীয় নেতাদের এ বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত যে, কোন প্রথা কে পালন করতে পারবে। কেউ যেন আর এ রকম বিপদে না পড়ে। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি