এল আর বাদল: বাংলাদেশ যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে মাঠে নামে, তখনই হিসাব-নিকাশ কষতে বসে ক্রিকেটপ্রেমীরা। কত রেটিং পয়েন্ট ভাগ্যে জুটলো আর কতটা হারাল। এসব সমীকরণ অবশ্য ২০১৯ বিশ্বকাপটা সরাসরি খেলার আগ্রহ থেকেই।
গত শুক্রবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচটা জিতলে নামের পাশে দুটি রেটিং পয়েন্ট যোগ হতো। শুধু তা-ই নয়, এই ম্যাচ হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশ নিজেদের আগের রেটিং থেকে কমে গেছে এক পয়েন্ট। জিতলে বাংলাদেশের পয়েন্ট হতো ৯৭, এখন সেটি হয়ে গেছে ৯৪। শুধু পরাজয়ের কারণে বাংলাদেশ ১ পয়েন্ট হারিয়েছে বটে, কিন্তু শুক্রবারের ম্যাচে বাংলাদেশ সব মিলিয়ে হারাল তিন পয়েন্টই।
বিসিবির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা অবশ্য এই সিরিজ শুরুর আগেই একটা সুখবর দিয়ে জানিয়েছিলেন, ইংল্যান্ড সিরিজ তো বটেই, বর্তমান ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম (এফটিপি) অনুযায়ী ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাকি সব সিরিজে হারলেও নাকি বাংলাদেশ দলের সরাসরি ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত। আইসিসিই বিসিবিকে এমন আভাস দিয়েছে বলে দাবি করেছিলেন সেই কর্মকর্তা। কিন্তু তার এই কথায় পুরো আস্থা রাখাও যাচ্ছে না। গত বছর এপ্রিলে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের একটি কথায় র্যাঙ্কিং নিয়ে বিভ্রান্ত দেখা দিয়েছিল। তখন বাংলাদেশের বেশির ভাগ সংবাদমাধ্যম পাপনকে উদ্ধৃত করে সংবাদ দিয়েছিল, বাংলাদেশ র্যাঙ্কিংয়ের পাঁচে উঠে এসেছে। শেষ পর্যন্ত দেখা যায় পাপন পুরো ব্যাপারটি ?পরিষ্কার করতে পারেননি বলে এক ধরনের বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।
প্রতি বছর একটা নির্দিষ্ট সময়ে আইসিসি র্যাঙ্কিং সংশোধন/হালনাগাদ করে। এ সময় পুরনো ম্যাচগুলো বাদ দিয়ে শুধু আগের তিন মৌসুমের ম্যাচের হিসাব ধরা হয়। এ কারণে দেখা যায়, কখনো কখনো অপ্র্রত্যাশিতভাবে কোনো দলের রেটিং পয়েন্ট হুট করে বেড়ে গেছে। কোনো দলের রেটিং পয়েন্ট কমে গেছে। গত বছরও যেমন র্যাঙ্কিং সংশোধন করায় নতুন কোনো ম্যাচ না খেলেও বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট বেড়ে গিয়েছিল।
আইসিসির বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিতব্য র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ আট দল ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলবে। সে সময় র্যাঙ্কিং সংশোধন/হালনাগাদ করতে আইসিসি ?বিবেচনায় নেবে ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬, ও ২০১৬-১৭ মৌসুমের ফলাফলগুলো। আশার কথা হলো, ২০১৪ সালের নভেম্বর থেকেই বাংলাদেশ ওয়ানডেতে দুর্দান্ত খেলছে। এখন পর্যন্ত একটিও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হারেনি। এর মধ্যে ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালেও উঠেছিল। র্যাঙ্কিংয়ের সংশোধনের সময় এই ম্যাচগুলোই বেশি গুরুত্ব পাবে।
এ কারণে পরের সবগুলো সিরিজ হারলে হয়তো বাংলাদেশের ক্ষতি হবে না। হিসাবও তা-ই বলছে। কিন্তু আসল চিত্রটা তো এখনো পরিষ্কার করেনি আইসিসি। কোন তারিখ থেকে কত তারিখের ম্যাচ ধরা হবে, কোন মৌসুমের কত শতাংশ রেটিং পয়েন্ট যোগ হবে, আর সেটি হলে পুরো চিত্রটা কী দাঁড়ায়। এ ধারণা বাংলাদেশের কাছে এখনো অস্বচ্ছ। তাই সিরিজ হারলেও ক্ষতি নেই, এই বার্তার উপর নির্ভর না করাই হবে বিসিবির জন্য উত্তম। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম