লিহান লিমা: ডেমোক্রেট দলীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। আইনজীবী, দুইবারের ফার্স্ট লেডি, সাবেক সিনেটর, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। কিন্তু ৩০ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হিলারিকে নয়, বরং তার বয়স ৬৮-কেই ঘৃণা করে বেশিরভাগ ডেমোক্রেট তরুণী। এর আগের জরিপে হিলারির প্রতি নারীদের সমর্থনের বিষয়টি দেখা গেলেও বাস্তব পরিস্থিতি এর উল্টো। তরুণীদের কাছে হিলারি তারুণ্যের প্রতীক নন, তারা হিলারির প্রাথমিক প্রতিদ্বন্দ্বী সেন বার্নি স্যান্ডার্সকেই ডেমোক্রেট দল থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতার জন্য উপযুক্ত মনে করেছিলেন।
তারা মনে করেন, গ্রান্ড-পা কে এই স্থানে কল্পনা করা গেলেও গ্রান্ড-মাকে ওভাল অফিসে কখনই ভাবা যায় না। আমেরিকা তরুণ নারী সমাজের প্রতিনিধিত্বে বিশ্বাস করে। আমেরিকানদের কাছে বৃদ্ধ নারীরা অভিনেতার ভূমিকায়, যারা শারীরিক অক্ষমতার দিকে যাত্রা করছেন।
ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যালিফোর্নিয়ার এক গবেষণায় দেখা যায়, ৪০ বছরের চেয়ে বেশি বয়সের অভিনেতার চরিত্রে পুরুষের ভূমিকা ৮০ ভাগ। হেলেন মাইরেন, জুডি ডেন্স এবং মারিয়েল স্ট্রিপ-এর মতো অভিজ্ঞ বয়স্ক নারীরা থাকতেও হলিউডের এই অবস্থা। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও তুল্যানি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা যায়, চাকরির আবেদনপত্রে অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও তরুণ নারীদের চেয়ে বয়স্ক নারীরা সাক্ষাৎকারের জন্য খুব কম ডাক পান। কিন্তু যখন এক্ষেত্রে পুরুষরা আসেন তরুণ এবং বয়স্করা যোগ্যতা অনুযায়ী সমান সুযোগ পেয়ে থাকেন।
‘গ্রান্ডমাদার হাইপোথিসিস’-এ দেখা যায়, কর্পোরেট আমেরিকা সেক্সইজম/এজইজম সমস্যায় ভুগছে। বয়স্ক নারীরা খুব কম প্রশাসনিক দায়িত্ব পান। আমেরিকার ৫০০টি কোম্পানির মধ্যে নারী সিইও-এর সংখ্যা ৪ ভাগ। ১৯৭০ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস মাত্র ১৯ শতাংশ নারী প্রতিনিধিকে পেয়েছে।
তবে আশার কথা এটি যে, হিলারি বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তার মন্ত্রিসভার অর্ধেকই হবেন নারী। আর তিনি হবেন বিশ্বের সবচাইতে ক্ষমতাধর ব্যক্তি। এখন দেখার বিষয়, হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রবেশ করে হিলারি বয়স্ক নারীদের প্রতি অবজ্ঞার দৃষ্টি মুছে দিতে পারেন কি না। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম