রিকু আমির: সিলেটে ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের চাপাতির কোপে গুরুতর আহত খাদিজা চোখ খানিকটা মেলে, ডানপাশ ও ডান হাত-পা নাড়ায়। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে খাদিজা ৯৬ ঘণ্টা থাকার পর প্রেস ব্রিফিং-এর মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন হাসপাতালের নিউরোসার্জন ডা. এএম রেজাউস সাত্তার। শনিবার দুপুর ১টার দিকে স্কয়ার হাসপাতালে এ প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
ডা. সাত্তার বলেন, ‘গত সোমবার থেকে অচেতন খাদিজা ব্যথা পেলে সাড়া দিচ্ছেন। এটি জ্ঞান ফিরে আসার লক্ষণ। শুক্রবার আমরা ঘুমের ওষুধের মাত্রা কমিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাকে ডান হাত ও ডান পা কিছুটা নাড়তে দেখেছি, চোখ খানিকটা মেলেছিল। তিনি ব্যথা পেলে সাড়া দিচ্ছেন। আগে তার বেঁচে থাকার সম্ভবনা ছিল ৫%, এখন সেটা বেড়ে ১০%-এর মতো হয়েছে। আরও দুই-তিন সপ্তাহ পর খাদিজার সম্পর্কে আরও ভালো কিছু বলা যাবে’।
তিনি বলেন, ‘মস্তিষ্ক কতটুকু কাজ করছে বোঝার জন্য গ্লাসগো কোমা স্কেল ব্যবহার করা হয়। আগে খাদিজার স্কোর ছিল ১৫ তে ৬। অবস্থার উন্নতি হয়ে সেটি এখন ১০ এ ৬ হয়েছে। চোখ মেলা, ডাকে সাড়া দেওয়া ও স্পর্শ করলে বা ব্যথা পেলে সাড়া দেওয়া এই তিন নির্ণায়কের ভিত্তিতে স্কোর নির্ধারণ করা হয়’।
এখনো খাদিজা আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টেই আছে জনিয়ে রেজাউস সাত্তার বলেন, ‘মস্তিষ্কে চাপ কমানোর জন্য তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের আঘাতের ক্ষেত্রে গোল্ডেন টাইম বলতে একটা কথা আছে। অর্থাৎ এরকম আঘাত পাওয়ার পর চার ঘণ্টার মধ্যে সঠিক চিকিৎসা শুরু করা। খাদিজার ক্ষেত্রে সেটা হতে কিছুটা ঘাটতি ছিল। তাছাড়া অনেক দেরিতে আমাদের কাছে আনা হয়েছে। তবে এখন আমাদের আশা বেড়েছে, তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অল্প হলেও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ধরনের আঘাত সইবার মতো তার শারীরিক সামর্থ্য কম, তার বয়স মাত্র ১৯, এজন্য ঝুঁকি বেশিই’।
হাসপাতালের উপপরিচালক এবং ইন্টারনাল মেডিসিন ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের পরামর্শক মির্জা নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘খাদিজাকে অচেতন অবস্থায় স্কয়ার হাসপাতালে আনা হয়। তখন তাকে বাঁচিয়ে রাখাই ছিল আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আজ ৯৬ ঘণ্টা পর বলছি, খাদিজা বেগমের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেড়েছে। তবে খাদিজার জ্ঞান পুরোপুরি ফিরে আসতে কয়েক সপ্তাহ বা মাসও লেগে যেতে পারে’।
তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের আরও সতর্ক হয়ে সংবাদ পরিবেশনের অনুরোধ করেছেন। এ প্রসঙ্গে মির্জা নিজামউদ্দিন বলেন, ‘কোথাও কোথাও প্রচার করা হয়েছে, মেয়েটি নাকি মারা গেছে, তার অবস্থা নাকি অনেক খারাপ হয়েছে। কিন্তু কোথায়? অল্প হলেও তার অবস্থার উন্নতি ঘটেছে, ও তো বেঁচেই আছে’। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম