কনে পাকিস্তানি, বর ভারতের; বিয়ে আটকে আছে পাসপোর্টে!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের যোধপুরের বাসিন্দা নরেশ তেওয়ানি আর পাকিস্তানের করাচির প্রিয়া বাচ্চানি। মাঝে ব্যবধান একটি কাঁটাতারের বেড়া। সব বাধা ডিঙিয়ে যখন তারা বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখনই নতুন বাধা এসে পথ আগলে দাঁড়াল। কাশ্মীর হামলার পর দুই দেশের সম্পর্কের টানাপড়েনে পড়ে বিয়ে নিয়ে শুরু হয়েছে অনিশ্চয়তা।
মাসখানেক পর দুজনের চার হাত এক হওয়ার কথা। বিয়ে করতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আসার কথা প্রিয়ার। কিন্তু আবেদন করা সত্ত্বেও তার পরিবার, পরিজনদের ভিসা দিচ্ছিল না পাকিস্তানের ভারতীয় দূতাবাস। সংঘাতের আবহে শেষ পর্যন্ত বিয়েটাই হবে কিনা, এমন সংশয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের দরজায় হাজির হন নরেশ। টিওআই
টুইটারে নিজের অসহায়তার কথা জানান। সুষমা সব জেনে যাবতীয় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবেন বলে কথা দিয়েছেন তাকে। অভয় দিয়ে টুইট করেছেন, উদ্বিগ্ন হবেন না, আমরা ভিসা দেব। সুষমার জবাব পাওয়ার আগে পর্যন্ত তীব্র অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলেন নরেশ। তিনি বলেছেন, পাত্রীপক্ষের পরিবারের ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ফর্ম ভরে তিন মাস আগেই জমা দেওয়া হয়েছিল। আমরা জানতাম, সময় মতোই ভিসা মিলবে। ভিসা না পেয়ে মেয়ের বাড়িতেও শুরু হয় দুশ্চিন্তা, উদ্বেগের পালা। তারা যেকোনোভাবে ভিসা জোগাড় করতে দৌড়ঝাঁপ করতে থাকেন, একে-তাকে ধরে ছোটাছুটিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ওদিকেই সময় পেরিয়ে যায়। ফলে বিয়ের আয়েজনেও বেশ সমস্যার সৃষ্টি হয়।
সুষমা ব্যবস্থা করে দেবেন বলে দেওয়ায় ভরসা পাচ্ছেন নরেশ। তিনি বলেছেন, বিপদে-আপদে পড়ে লোকে তাকে টুইট করে, তিনিও ত্রাতা হয়ে ওঠেন, সমস্যা মিটে যায় বলে শুনেছিলাম। সেজন্যই ওনাকে টুইট করি। নরেশের বাবা কানহাইয়া লাল ২০০১ সালে পাকিস্তান গিয়েছিলেন। দুটি দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের মিল আছে বলে মনে হওয়ায় ছেলের জন্য পাকিস্তান থেকে বউ আনবেন, তখনই মনে মনে ঠিক করে ফেলেন। কিন্তু উরি হামলা, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর দুই প্রতিবেশী দেশের বর্তমান সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে তার মনে হতে থাকে, হয়তো তার স্বপ্নপূরণে আরও সময় লাগবে।
সুষমার উত্তরের পর এখন তিনিও আশার আলো দেখছেন। দুই সহোদর দেশের চলতি বিবাদ-বিরোধের মধ্যে হয়তো উজ্জ্বল ব্যতিক্রম হয়ে উঠবে তার বাড়িটাই। সম্পাদনা: ইমরুল শাহেদ