আওয়ামী লীগে উদার গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব দেখতে চান বিএনপি নেতা আহমদ আযম
শাহানুজ্জামান টিটু: আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। তাই কর্মব্যস্ত সময় পার করছে দলটির নেতাকর্মীরা। এসবের মধ্যেও আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপির ভাবনার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আযম বলেন, আওয়ামী লীগের কাউন্সিল নিয়ে আমরা কোনো তীর্যক মন্তব্য করতে চাই না। বিএনপির ১৯ মার্চের জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে আওয়ামী লীগ র্শীষ নেতারা ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রীরা যে বিদ্রুপাত্মক বক্তব্য পেশ করেছেন তাতে মনে হয়েছে বিএনপি কাউন্সিল সফল হোক এটা তারা আদৌ চাননি। তাদের তখনকার বক্তব্য ছিলো নেতিবাচক, আক্রমণাত্মক ও বিদ্রুপাত্মক। গতকাল শনিবার এই প্রতিবেদকের দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বিএনপির তরুণ আইনজীবী এসব কথা বলেন।
বিএনপির কাউন্সিল নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সমালোচনা বা বক্তব্য দেওয়াকে আহমদ আযম মনে করেন, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এটা অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু বিএনপি একটি ইতিবাচক দল, কর্মী হিসেবে আমিও একজন ইতিবাচক মানুষ। এজন্য আওয়ামী লীগের কাউন্সিল সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক কথা বলতে চাই না। তিনি বলেন, আমরা এবং জাতি দেখতে চায় যে আওয়ামী লীগ ভালো একটা কাউন্সিল করছে। সেখানে যোগ্যতার ভিত্তিতে ত্যাগি, সক্রিয় এবং উদার গণতন্ত্রী নেতাদেরকে আওয়ামী লীগ মূল্যায়ন করুক। এটা বিএনপি এবং জাতি দেখতে চায়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, কারণ আওয়ামী লীগ দলগতভাবে এবং আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে, যে পলিসিতে একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করেছে তাতে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। একইভাবে বাংলাদেশের জনগণ দিনের পর দিন হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। আজকে গণতন্ত্র নির্বাসনের পথে, ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগে যদি একটি উদার গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফেরাতে আওয়ামী লীগ আশা করি বিএনপিকে সহযোগিতা করবে।
এক প্রশ্নের জবাব আহমদ আযম বলেন, আওয়ামী লীগে কোন নেতৃত্ব আসবে আমরা জানি না। আমরা আশা ও প্রত্যাশা করি আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে উদার গণতন্ত্রী নেতৃত্ব আসবে। বিএনপির ওপরে এই ধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রনোদিত হামলা, গুম, খুনের রাজনীতি থেকে তারা বেরিয়ে আসবেন।
তিনি বলেন, প্রথম কথাটা হলো বিএনপি কাউন্সিলের আগে আওয়ামী লীগ ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের বা সরকার প্রধানের যে মন্তব্য সেগুলোকে আমি শুধুমাত্র কটূক্তি কিংবা ব্যাঙাত্মক ভাব প্রকাশ ছাড়া কোনো ইতিবাচক দিক দেখিনি। মা ও ছেলে বিএনপিতে রাজনীতি করলে সেটা দোষের কারণ হয়। কিন্তু আপনি ভারতের রাজনীতিতে। সেখানে কংগ্রেস প্রধান সোনিয়া গান্ধী আবার মহাসচিব কিন্তু তারই ছেলে রাহুল গান্ধী। সেখানে কোনো সমালোচনা নেই। রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর সোনিয়া গান্ধী গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে এসেছেন। কিন্তু রাহুল গান্ধী রাজনীতি করে দলের মহাসচিব হয়েছেন। আর বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক জীবন দীর্ঘ হয়ে গেছে। আর তারেক রহমানের রাজনৈতিক জীবন রাহুল গান্ধীর চেয়ে অনেক দীর্ঘ। কাজেই বিএনপির কমিটি মা ছেলের কমিটি বলাটা হবে অন্যায় ও অগণতান্ত্রিক।
আওয়ামী লীগে যদি সজীব ওয়াজেদ জয় ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি তারা কেউই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, রাজনৈতিক চর্চার সাথেও সম্পৃক্ত নয়। তারা যদি কমিটিতে আসে তাহলে সেটা হবে প্রকৃত পরিবারতন্ত্র।
আযম বলেন, বিএনপির কাউন্সিলের জায়গা নিয়ে অনেক নাটক হয়েছে এবং বিএনপি ও বিএনপির অর্থ সম্পর্কেও কথা বলেছেন। আপনারা দেখেছেন বিএনপি একদিনের মধ্যে অল্প সময়ের মধ্যে অতি অল্প খরচে বিএনপি তার কাউন্সিল সম্পন্ন করেছে। কিন্তু পত্রপত্রিকায় যা দেখছি। আওয়ামী লীগ সারা ঢাকা শহর আলোক মালায় সজ্জিত করবেন, ঢাকা শহরকে সাজাবেন। দুদিনে সারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ব্যবহার করবেন এবং শুনছি প্রায় অর্ধ শতকোটি টাকার বাজেট (যদিও আমি জানি না) নিয়ে নামা হচ্ছে। এই টাকার সংস্থান কোথা থেকে হবে। কারা তাদেরকে এই অর্থ দেবে। সেই অর্থে কতটুকু স্বচ্ছতা। সেই অর্থ যোগান হবে বা যারা দেবে তারা সেই অর্থ কোথা থেকে পেয়েছেন। সেই অর্থ আয়কর দেওয়া কিনা, সেটা কোনো স্বচ্ছ অর্থ কিনা, এটা এখনই বলার সময় আসেনি। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম