রাশিয়ার সমরনীতির পরিবর্তন
সৈয়দ রশিদ আলম
একটা সময় ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন পরবর্তীতে রাশিয়া তার মনোনীত পছন্দনীয় দেশ ছাড়া সবার কাছে তার সমরাস্ত্র বিক্রি করত না। পরবর্তীতে এই নীতি থেকে রাশিয়া বেরিয়ে আসে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশে সমরাস্ত্র বিক্রি শুরু করে, বিশেষ করে যে দেশগুলোতে রাশিয়া অস্ত্র বিক্রি করত। বর্তমানে ভারতের বড় ধরনের অস্ত্র বিক্রেতা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এক চুক্তির আওতায় ভারত ২২টি চালকবিহীন প্রিডেটার গোয়েন্দা বিমান পাওয়ার চুক্তি করতে যাচ্ছে। রাশিয়া সিরিয়াতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। যার নাম এস-৩০০। শত্রু পক্ষের নৌঘাটি, বিমানঘাটি বা স্থলঘাটি থেকে যখন মিসাইল নিক্ষেপ করা হবে, তখন এস-৩০০ মিসাইল সিস্টেম আকাশ পথেই তাকে ধ্বংস করে দিবে। এর ফলে এটা প্রমাণিত হচ্ছে, রাশিয়া ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে। ক্রিমিয়া দখল করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সু-কৌশলে রাশিয়াকে একঘরে করতে চাচ্ছে।
ভøাদিমির পুতিন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে রাশিয়াকে পরাশক্তিতে পরিণত করেছেন। একটি শক্তিশালী পরমাণুবাহিনী গড়ে তুলেছেন। রাশিয়ার তৈরি এসএস-২৪ মিসাইল ১১০০০ (এগার হাজার) কিলোমিটার দূরে শত্রুপক্ষের ঘাটিতে হামলা চালাতে সক্ষম। প্রতিটি এসএস-২৪ দুটি করে পরমাণু বোমা বহন করতে সক্ষম। একসময় মনে করা হতো, যুক্তরাষ্ট্র একাই পৃথিবীতে কর্তৃত্ব করে বেড়াবে, কিন্তু রাশিয়ার কারণে সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না। সেই সঙ্গে রাশিয়া, চীন, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম ও পাকিস্তানের কাছে সমরাস্ত্র বিক্রি করছে ও ভবিষ্যতে বিক্রির চিন্তা-ভাবনা করছে।
ভারত যত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক গড়ে তুলবে রাশিয়া ততবেশি যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী দেশগুলোর কাছে সমরাস্ত্র বিক্রি করবে। ইতোমধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে রাশিয়ার যৌথ সামরিক মহরা হয়েছে। একই সঙ্গে রাশিয়ার সমর বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তারা যদি মনে করেন ন্যাটো জোটের যেকোনো দেশকে পরমাণু অস্ত্র দ্বারা ধুলায়ে মিশে দিতে পারে, বিশেষ করে ব্রিটেনের সমর বিশেষজ্ঞরা স্বীকার করেছেন রাশিয়ার ব্যাক ফায়ার পরমাণু বোমারু বিমান দ্বারা রাশিয়া যদি ব্রিটেনে হামলা করে, তাহলে তিনদিনের মধ্যে ব্রিটেনের পরাজয় ঘটবে।
কারণ, ব্রিটেনের কাছে প্রচলিত অস্ত্র থাকলেও রাশিয়ার ভয়াবহ আক্রমণের মুখে দাঁড়াতে পারবে না। যে কারণে, ব্রিটেন দুটি বিমানবাহী জাহাজ নির্মাণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ও যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি আকাশ দানব এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান সংগ্রহের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। তবে ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র বা ন্যাটো জোটের কোনো দেশের পক্ষে সম্ভব হবে না রাশিয়ার শক্তিশালী পরমাণু বোমা, পরমাণু অস্ত্রসজ্জিত বোমারু বিমান, পরমাণু অস্ত্রসজ্জিত সাবমেরিন ও প্রচলিত অস্ত্রের মোকাবিলা করা।
লেখক: কলামিস্ট/সম্পাদনা: আশিক রহমান