প্রকৃত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা গ্রেফতার হলে খুবই ভালো
খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ
যেকোনো দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে সে দেশের ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সেই প্রতিষ্ঠানটি যদি হয় দুর্নীতিতে জর্জরিত, তাহলে একটি দেশের অর্থনীতি কোন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে সেটা ভেবেই আতঙ্কিত আজ সমাজ, রাষ্ট্র ও সমস্ত অর্থনীতি। ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতির অভিযোগে গত সাড়ে ছয় মাসে ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রায় ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের বর্তমান নতুন চেয়ারম্যান যোগদানের পর থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রকৃত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যদি দুদক গ্রেপ্তার করে থাকে, তারা গ্রেপ্তার হয় তাহলে সেটি খুবই ভালো। এ গ্রেপ্তারে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা যদি আতঙ্কিত হয়, সেটাও ভালো। তবে নিশ্চিত না হয়ে যেন কাউকে গ্রেপ্তার করা না হয়। যারা দুর্নীতি, দুর্নীতিবাজদের লালন-পালন করেছেন, তাদের কিন্তু এখনও ধরা হয়নি।
দুর্নীতিতে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল, বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু। তাকেই ধরা হয়নি। শোনা গেছে, দুদক নাকি বলেছে, তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক তাকে অপসারণ করার জন্য যে পত্রটি সরকাররের অর্থমন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে, ওই চিঠিটা যেন তারা দেখেন। সেই চিঠিটা বাংলাদেশ ব্যাংকেরই শুধু নয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং আইনের আওতায় চিঠিটা লেখা হয়েছে। একজন কর্মকর্তা অপরাধী না হলে বাংলাদেশ ব্যাংক কাউকে অপসারণের কথা বলে না। ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেই সে দুর্নীতির জন্য দায়ী হবেন তা নয়। তবে, আব্দুল হাই বাচ্চু ব্যক্তিগতভাবে দায়ী ছিলেন। সেজন্য সবকিছু ভালোভাবে দেখে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা জরুরি।
সাম্প্রতিক সময়ে দুদকের গ্রেপ্তারের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। সমাজে দুর্নীতির হার যখন খুব বেশি ছড়িয়ে পড়ে তখন এ ধরনের ক্ষমতার প্রয়োজন হয়। কিন্তু যারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এ ধরনের ক্ষমতা ব্যবহার করতে হয়। ক্ষমতা আছে বলেই প্রয়োগ করতে হবে তা নয়। একেবারে শতভাগ নিশ্চিত হয়েই তখন এটা প্রয়োগ করলে ভালো হয় এবং সুফল পাওয়া যাবে।
পরিচিতি: অর্থনীতিবিদ
মতামত গ্রহণ: শরিফুল ইসলাম/সম্পাদনা: আশিক রহমান