‘মোদির আমলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের আশা নেই’
এম রবিউল্লাহ: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমলে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের বরফ গলার কোনো আশা নেই বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ। একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাাৎকারে আজিজ দাবি করেছেন, এ অঞ্চলে ভারতের ‘আধিপত্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি’র বিরোধিতা করছে পাকিস্তান। তিনি সমতার ভিত্তিতে পাকিস্তান-ভারত সম্পর্কের উন্নতির কথা জানিয়েছেন বলে পাকিস্তান টুডের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।
আজিজ আরও বলেন, পাকিস্তানের পার্লামেন্টে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত প্রস্তাবে ‘কাশ্মীরে অত্যাচার, নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতের যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ, কাশ্মীর সম্পর্কে ভারতের মতামত খারিজ, ভারতের সিন্ধু পানি চুক্তি রদ করার হুমকি এবং বেলুচিস্তানে ভারতের হস্তপে’সহ সব বিষয়গুলো উল্লেখিত হয়েছে।
ভারতের এবিপি নিউজ জানায়, কাশ্মীর প্রশ্নে আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন চেষ্টায় সফল হতে পারেনি পাকিস্তান। জাতিসংঘে পাকিস্তানের অভিযোগ সর্বসম্মতভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সচেষ্ট হতে বলেছে। এই অবস্থায় সারতাজ বুঝিয়ে দিয়েছেন, নানা অভিযোগ তুলে ভারতের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবে পাকিস্তান।
পাকিস্তান টুডের বরাত দিয়ে ভারতের প্রভাবশালী পত্রিকা টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, আজিজ জানিয়েছেন, পাকিস্তান পার্লামেন্টে গৃহীত প্রস্তাব পাকিস্তান বিভিন্ন মিশন, সংবাদমাধ্যম এবং সমগ্র বিশ্বের থিঙ্কট্যাঙ্কগুলোকে বিতরণ করা হবে। শরিফের উপদেষ্টা আরও দাবি করেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন অঙ্গনে যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনা প্রক্রিয়া শুরুর উপরই গুরুত্ব দিয়েছে।
সম্প্রতি জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ আটকাতে ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত সিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশ্নের উত্তরে আজিজ বলেছেন, জনগণের যাতায়াত ও বাণিজ্য বজায় থাকলে এেেত্র আপত্তির কোনো কারণ নেই।
উরিতে সেনা ছাউনিতে হামলায় যুক্ত সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যেকোনো ব্যবস্থা নেবে না তাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে শরিফের উপদেষ্টার বক্তব্যে। কারণ, আজিজ ১৮ সেপ্টেম্বরের উরিতে সেনা ছাউনিতে হামলাকে ‘সাজানো’ বলে দাবি করেছেন। তার দাবি, এ ধরনের ‘সাজানো ঘটনা’ দিয়ে কাশ্মীর প্রসঙ্গ থেকে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি ঘোরানোর েেত্র সফল হবে না ভারত।
গত ৮ জুলাই হিজবুল নেতা বুরহান ওয়ানি ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে নিহত হয়। ওয়ানি নিহত হওয়া নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠে কাশ্মীর উপত্যকা। এর পর ১৮ সেপ্টেম্বর ভারতের উরি সেনা ক্যাম্পে জঙ্গিদের হামলায় ১৮ ভারতীয় জওয়ান নিহত হওয়ার পরে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠে কাশ্মীর উপত্যকা। দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে বৈরিতা শুরু হয়। একাধিক সূত্র অবলম্বনে। সম্পাদনা: তারেক