
চীন বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ বাড়াবে: তোফায়েল আহমেদ
এস.ইসলাম জয়: বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ আরও বাড়াবে চীন। চীন বিনিয়োগ বান্ধব দেশ এবং বাংলাদেশের বড় বন্ধু। সেই মুক্তিযুদ্ধ থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের পাশে রয়েছে। তিনি বলেন, ভারতের মতো চীনের সঙ্গেও বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। তবে ভারতেরটা নিয়ে যত আলোচনা হয়, চীনেরটা নিয়ে তত আলোচনা হয় না। এই দুই দেশ থেকে বেশি আমদানি ক্ষেত্রে বাংলাদেশই লাভবান হচ্ছে। গতকাল রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্ব : প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন বাণিজ্যমন্ত্রী ।
তিনি বলেন, ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে ২০টি ইকোনমিক জোনের কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে একটি চীনকে দেওয়া হবে। পদ্মা সেতুতে রেল লাইন , কর্ণফুলী ট্যানেল, গার্মেন্টস পল্লীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন বড় বড় প্রকল্পে চীন বিনিয়োগ করছে। আমরা সমতা অর্জন করেছি বলেই বাংলাদেশে চীন বিনিয়োগে আগ্রহী এবং ভবিষ্যতে এ বিনিয়োগ আরও বাড়বে।
তবে চীন বাংলাদেশে যেসব প্রকল্পে অর্থায়ন করে, সেগুলোর েেত্র একটি অসুবিধার দিক আছে। আমাদের আনসলিসিট (টেন্ডারবিহীন) ঋণ দিচ্ছে চীন। চীনের দেওয়া ঋণের সুদের হার বেশি এটা ঠিক না। তবে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইডিবির ঋণের তুলনায় চীনকে বেশি হারে সুদ দিতে হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রায়ই প্রশ্ন তুলি আমি।
তিনি বলেন, বর্তমানে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ১১ বিলিয়ন ডলারের। এর মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি থাকলেও তা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। ভারতে তো শুধু তামাক আর মদে কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পাই । সেখানে অনেক দেশে আমরা কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পাচ্ছি। তাই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে একটু আস্তে ধীরে হাঁটছি।
মন্ত্রী বলেন, চীনের দেওয়া ঋণের সুদের হার বেশি এটা ঠিক না। তবে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইডিবির ঋণের তুলনায় চীনকে বেশি হারে সুদ দিতে হচ্ছে। আমাদের টেন্ডারবিহীন ঋণ দিচ্ছে চীন।
মন্ত্রী আরও বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে চীনে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৫ শতাংশ। যেখানে দেশের মোট রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ শতাংশ। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ১৪ অক্টোবর রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় আসছেন, সে সময় বেশকিছু সমঝোতা স্মারক সই হবে।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে মন্তব্য করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভারতেও রাজনৈতিক মতপার্থক্য আছে। কিন্তু জাতীয় নীতিতে তারা এক হয়ে যায়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আলোচনা সভায় সব দল এক হয়ে এক টেবিলে বসে তারা সিদ্ধান্ত নেয়। তাই আমাদের রাজনীতিতে পথ ও মতের ভিন্নতা থাকতেই পারে কিন্তু জাতীয় ও অর্থনীতিতে পথ ও মত ভুলে এক হতে পারলে দেশ লাভবান হবে এবং এগিয়ে যাবে দেশ।
সভা পরিচালনা করেন ইআরএফের সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলাল। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেনÑ সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া,বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল(অব.) মাহাবুবুর রহমান, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, ইআরএফের সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলাল, সিনিয়র সাংবাদিক শাবান মাহমুদ, সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান প্রমুখ। সম্পাদনা: উম্মুল ওয়ারা সুইটি
