বিশ্বজিৎ দত্ত : রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যক্তিগতভাবে আশ্বাস দিয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। সেই হিসাবেই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এগিয়েছে। রাশিয়া এখানে ১২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। দুই দেশের এ সংক্রান্ত চুক্তিতে পারমাণবিক প্রকল্পের জ্বালানি রাশিয়া সরবরাহ করবে, এর বর্জ্যও তারাই নিয়ে যাবে।
আগামী ১৬ অক্টোবর ভারতের গোয়ায় বিমসটেক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আবারো দেখা হবে পুতিনের। ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে পুতিন গোয়ায় আসবেন। সেখানে থাকবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তারই অনুরোধে ব্রিকস নেতারা বিমসটেক নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। এরইমধ্যে বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয়-ত্রিপক্ষীয় বৈঠকও হবে। বর্তমানে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে শুধু রাশিয়া নয়, ভারতীয়রাও কাজ করছে। এই হিসাবে রূপপুর প্রকল্প নিয়ে পুতিনের সঙ্গে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্র জানায়, সম্প্রতি পারমাণবিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে চুক্তি করতে রাশিয়ার একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসেছে। তারা চায় পারমাণবিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিবহন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জ্বালানি সরবরাহের নিরাপত্তা, এ সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয়ে নানা দিক নিয়ে ভিন্ন চুক্তি করা। সূত্র জানায়, এ বিষয়ে নতুন করে দরকষাকষি করতেও চায় রাশিয়া।
স্পেন্ট ফুয়েল তথা পারমাণবিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান জানান, রাশিয়া বর্জ্য নিয়ে যাবেÑ এটি দুই দেশের মধ্যে করা চুক্তিতেই বলা রয়েছে। চুক্তির ৮ নম্বর আর্টিকেলে বলা হয়েছে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করবে রাশিয়া এবং সেই ফুয়েল তারা তাদের দেশে নিয়ে যাবে। এই চুক্তি বাতিল করার বিধানও আছে। তবে সেখানে বলা রয়েছে, সহযোগিতা চুক্তি (আইজিএ) বাতিল হলেও আর্টিকেল ৮ বলবৎ থাকবে। উভয় সরকার কোনো কারণে আইজিএ বাতিল করলেও রাশিয়ান ফেডারেশন কর্তৃক স্পেন্ট নিউকিয়ার ফুয়েল ফেরত নেওয়ার বিধানটি আজীবন বলবৎ থাকবে। তিনি বলেন, দেশের কিছু বুদ্ধিজীবী এসব না জেনেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কথা বলেছে। তাদের বক্তব্য সত্য নয়।
তিনি বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে দুদেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। এখন আরও অনেক চুক্তি করতে হবে। ছোটখাটো অনেক বিষয় রয়েছে। এগুলো নিয়ে অনেকেই জল ঘোলা করতে চাচ্ছে। তিনি বলেন, রাশিয়া জানিয়েছেÑ ২০২১ সালের মধ্যেই তারা ২ হাজার মেগাওয়াটের একটি পারমাণবিক চুল্লি স্থাপন করতে পারবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম জানান, বর্জ্য যে সবসময় ক্ষতিকরÑ তা নয়। পারমাণবিক বর্জ্য থেকেই আসে ক্যান্সার শনাক্তের উপাদান। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী