নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: জঙ্গি দমনে সর্বোচ্চ সতর্কতাবস্থায় রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এ অবস্থায় জঙ্গিদের নীরব ভূমিকায় থাকলেও গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, যেকোনো সময় তারা বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে। গোয়েন্দাদের ধারণা, জঙ্গিরা পরবর্তী হমালার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়ায় তাদের সোর্সগুলোতে আগের চাইতেও বেশি সক্রিয় করেছে গোয়েন্দারা। এমনকি গণমাধ্যমের উপরও নজর রাখা হচ্ছে জঙ্গিদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার আশায়। পাশাপাশি দেশের যেসব গোয়েন্দা সংস্থা বিদেশি সংস্থার সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করে তাদের কাছেও জানতে চাওয়া হয়েছে বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা কিংবা হামলা হতে পারে এমন কোনো বিশেষ তথ্য আছে কিনা। থাকলে কারা, কি ধরনের এবং কোথায় টার্গেট করা হতে পারে এই ব্যাপারেও জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
জঙ্গি দমনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশেষ একটি সংস্থার ঊধ্বর্তন সূত্র জানায়, সারাদেশে জঙ্গি দমনের জন্য জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এজন্য দেশের বিভিন্নস্থানে অভিযান পরিচালনা করে জঙ্গি নিধন চলছে। সেই সঙ্গে তাদের সহযোগীদের ব্যাপারেও খোঁজ খবর করা হচ্ছে। জঙ্গি নির্মূল করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা চলছে। যত রকমের সূত্রে খবর পাওয়া সম্ভব সেই ব্যাপারেও চেষ্টা করা হচ্ছে।
গোয়েন্দা বিভাগের উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গি নির্মূলে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে তাদের পুরো সিন্ডিকেট নির্মূল করে দেওয়ার জন্য। অনেক সময় জঙ্গিদের ধরে আনার পর তারা সব তথ্য দিচ্ছে না। মরে যেতে চায় কিন্তু তথ্য দিতে চাইছে না। এই অবস্থায় তথ্য বের করার জন্য বিভিন্ন কৌশলও অবলম্বন করা হয়। ভয়ভীতিও দেখানো হয়। তবে তারা প্রাণ দিতে রাজি তথ্য দিতে রাজি না।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এপর্যন্ত যেসব জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাতে তারা স্বীকার করেছে, হামলা করার জন্য প্রস্তুতি রেখেছে। তবে কখন কোন গ্রুপ কোথায় হামলা করবে এই ব্যাপারে তারা এত আগেভাগে কোনো কথা জানতে পারেন না। অভিযানে যারা অংশ নেন তারাই জানেন। এর বাইরে যারা অর্থ, অস্ত্র ও পৃষ্ঠপোষকতা করেন তাদের এক গ্রুপের সঙ্গে আরেক গ্রুপের ওই ধরনের যোগাযোগ নেই। জঙ্গিদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রতিটি স্তর আলাদা করে ভাগ করা থাকে। এই জন্য অন্যরাও জানতে পারে না। ঠিক কবে কখন কোথায় কি হবে। আর যারা তথ্য বহন করে তাদের স্তর অনেক নীচে। এরা কেবল তথ্য সংগ্রহ করে। মূল পরিকল্পনাকারীরা বাইরে বের হন খুব কম। ঘরে থেকেই কাজ করেন।
সূত্র জানায়, বিভিন্ন জঙ্গির কাছ থেকে যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে আমরা নিশ্চিত তারা আরও বড় ধরনের হামলা করবে। এই হামলার স্থান ও সময় সেই সঙ্গে দিন সম্পর্কে কয়েক ঘণ্টা আগেও জানতে পারলে তাদের অভিযান ব্যর্থ করে দেওয়া যাবে। কিন্তু এখনও জানা যায়নি। তাই আমাদের প্রশ্ন পরবর্তী টার্গেট কবে কখন কোথায় এবং কারা? এনিয়ে দিন রাত কাজ চলছে। সম্পাদনা: সৈয়দ নূর-ই-আলম