ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশিদের জন্য ফের উন্মুক্ত হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)-এর শ্রমবাজার। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত অভিবাসী কর্মী গ্রহণ ও প্রেরণকারী দেশের সম্মেলনে ইউএই শ্রমবাজার উন্মুক্ত করে দিতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানায় বাংলাদেশ।
ওই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আগামী ১৬ অক্টোবর দেশটির উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছেন। এর প্রেেিত শিগগির মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে বাংলাদেশের শ্রমবাজার উন্মুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের অক্টোবরে হঠাৎ করেই বাংলাদেশি কর্মী নিতে অস্বীকৃতি জানায় দেশটি। এরপর বাংলাদেশ সরকারের প থেকে দফায় দফায় চেষ্টা চালানো হলেও কাক্সিত ফল আসেনি। গত ৪ বছর ধরে বাংলাদেশি কর্মীদের বন্ধ রয়েছে ইউএইর শ্রমবাজার। মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য সৌদি আরবের পর ইউএইর শ্রমবাজার উন্মুক্ত হওয়ার বিষয়টি খুবই আশাপ্রদ সংবাদ।
আগামী ১৬ অক্টোবর আমিরাত সরকারের প্রতিনিধি দলের ঢাকায় আসার তথ্য জানিয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি সাংবাদিকদের জানান, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দু-এক মাসের মধ্যেই আমিরাতে বাংলাদেশি কর্মী যেতে পারবে বলে আশা করছি। দেশটিতে ৭ লাখ কর্মীর চাহিদা রয়েছে।
সরকারি হিসেবে উপসাগরীয় দেশটিতে বর্তমানে ২৩ লাখ ৫৭ হাজার ৮৯৫ বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন। জাল পাসপোর্ট ও জাল ভিসা নিয়ে পর পর বেশকিছু বাংলাদেশি আটক হওয়ার পর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার কারণ দেখিয়ে ২০১২ সালের অক্টোবরে কর্মী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞার নির্দেশনা জারি করে আমিরাত কর্তৃপ।
তবে আমিরাতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিবাসন ও বন্দরবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প থেকে জানানো হয়, এ আদেশ অস্থায়ী। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এ নির্দেশনা তুলে নেওয়া হবে। তবে অদ্যাবধি নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে।
সৌদি আরবের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার ইউএই। নতুন ভিসা ইস্যু না করার পাশাপাশি পুরনোদের ভিসা নবায়নও বন্ধ করে দেওয়ায় দেশটিতে বাংলাদেশি কর্মী গমনের হার প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। এ বছরের সেপ্টেম্বরে মাত্র ৩৭৯ জন এবং অক্টোবরে (গতকাল পর্যন্ত) মাত্র ২০ জন বাংলাদেশির কর্মসংস্থান হয়েছে দেশটিতে। বিপর্যয়ের আগে দেশটিতে প্রতি মাসে গড়ে ২৫-৩০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশির কর্মসংস্থান হতো।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী আরও জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর আমি অভিবাসন প্রক্রিয়াকে আগে স্বচ্ছ করার উদ্যোগ নিই। এই সংস্কার করতে গিয়ে অনেক বাধা এসেছে- এখনো আসছে। এরপরও আমরা থেমে নেই। স্রেফ অসাধু উপায় অবলম্বন করে লোক পাঠানোর কারণে এই অস্বস্তির সৃষ্টি। ইউএই সরকার অনৈতিকভাবে লোক পাঠানোর বিরুদ্ধে আমাদের সঙ্গে একাট্টা হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই সব অন্ধকার কেটে যাবে।
ইউএই সরকার যেসব সমস্যার কারণ দেখিয়ে সব ধরনের ভিসা বন্ধ করেছে, সেগুলো সমাধানে কী করছেন। এমন প্রশ্নের জবাবে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, অভিবাসন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করায় নতুন করে সমস্যা আসবে বলে আমি মনে করি না। সূত্র : জাগোনিউজ, সম্পাদনা: সৈয়দ নূর-ই-আলম