রাজনৈতিক প্রচারণায় সমন্বিত বাজারজাতকরণ যোগাযোগ
অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান
লেখক: উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
রাজনৈতিক যোগাযোগকারীকে জানতে হবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় কোন স্তরটিতে তার অভীষ্ট অডিয়্যান্সের অবস্থান এবং কোন ধাপটি অতিক্রম করা এখন আবশ্যক।
রাজনৈতিক আদর্শ ও কর্মসূচি অবগত হওয়া?ণ?জ্ঞান আহরণ ণ?পছন্দ ণ অন্যান্য দলের আদর্শ ও কর্মসূচির তুলনায় অগ্রাধিকার প্রদান ণ প্রত্যয় সৃষ্টি/নিশ্চিত হওয়া ণ সমর্থন/অংশগ্রহণ বা ভোট প্রদান। রাজনৈতিক বার্তা পছন্দকরণ: একটি আদর্শ রাজনৈতিক বার্তা এমন হওয়া উচিত যা ‘মনোযোগ’ আকর্ষণ করবে, ‘আগ্রহ’ সৃষ্টি করবে, ‘আকাক্সক্ষা’ জাগাবে এবং ‘প্রত্যাশিত সাড়া’ (সমর্থন/অংশগ্রহণ বা ভোট প্রদান) অর্জন করবে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক যোগাযোগকারীকে তিনটি সমস্যা সমাধান করতে হবে। কী বলা হবে (বার্তার বিষয়বস্তু)? কীভাবে তা যুক্তিযুক্তভাবে বলা যাবে (বার্তা কাঠামো)? কে বলবে (বার্তার সূত্র)? রাজনৈতিক যোগাযোগকারীকে এমন একটি আবেদন বা থিম নির্বাচন করতে হবে যা প্রত্যাশিত সাড়া সৃষ্টিতে সক্ষম হবে। আবেদন তিনভাবে জানানো যেতে পারে।
যৌক্তিক আবেদন: এ ধরনের আবেদন অডিয়্যান্সের স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত। যেমন আবার যদি কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসে তখন কীভাবে জনগণের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষিত হবে তা বিগত সরকারের আমল ও বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের আমলে দ্রব্যমূল্যের তুলনামূলক চার্ট প্রদর্শনের মাধ্যমে দেখিয়ে দেওয়া।
আবেগময়ী আবেদন: ঋণাত্মক অথবা ধনাত্মক আবেগ সৃষ্টির চেষ্টা করা, যা জনসমর্থনকে প্রণোদিত করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, শহিদের আত্মত্যাগ, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, ১৫ আগস্ট ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরে জনগণের মধ্যে আবেগ সৃষ্টি করা অথবা রাজাকারের উত্থান, জঙ্গি মৌলবাদীদের ভয়ঙ্কর শক্তি সঞ্চয় ও দেশে জঙ্গি শাসনের ভয় ইত্যাদি জনগণের সামনে তুলে ধরা।
নৈতিক আবেদন: এই আবেদন দ্বারা অডিয়্যান্সকে সঠিক ও যথার্থ বিষয়ের প্রতি নির্দেশিত করা হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, গ্রেনেড হামলার সঠিক তদন্ত, ধর্মনিরপেক্ষ বৈষম্যহীন দারিদ্র্যমুক্ত আধুনিক গণতান্ত্রিক সুখি-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সমর্থন আদায়ের জন্য এ ধরনের আবেদন জানানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে নীতিনৈতিকতা, দেশপ্রেম, মাতৃভূমির প্রতি অঙ্গীকার ইত্যাদি বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে।
সম্পাদনা: আশিক রহমান