ফেসবুকে বাংলাদেশ…
মানুষ আর আপনাদের সামান্য পরিমাণও বিশ্বাস করে না
গোলাম মোর্তোজা, সম্পাদক, সাপ্তাহিক
বাংলাদেশ গ্যাসের উপর ভাসছে, পাইপলাইনে গ্যাস রপ্তানি করা উচিতÑ এই প্রপাগা-া বাংলাদেশের মানুষ শুনতে বাধ্য হয়েছেন কয়েক বছর। এই রূপকথা অসত্য প্রমাণ হয়েছে। প্রপাগা-াবাজরা তারপর কিছুদিন অন্তরালে থেকেছে।
ধারণা করা হয়েছিল, এরা আর দেশবিরোধী অসত্য প্রপাগা-া চালাবে না। এই ধারণা মিথ্যে প্রমাণ করে, তারা আবারও বাংলাদেশের বিপক্ষে কুখ্যাত এশিয়া এনার্জির পক্ষে মাঠে নেমে পড়ে। ফুলবাড়ির জনগণ এশিয়া এনার্জিকে বিতাড়িত করার পর, এরা আবার অন্তরালে চলে যায়।
গ্যাস রপ্তানি, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের পক্ষে সবচেয়ে সোচ্চার ছিল তামিম-ইজাজ জুটি। এখন রামপাল ইস্যুতে আবার তাদের তৎপর দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞের মতামত দিচ্ছে, যেভাবে মতামত দিয়েছিল গ্যাস রপ্তানি এবং এশিয়া এনার্জির পক্ষে।
আশার কথা, এদের কথা এখন আর মানুষ ধর্তব্যের মধ্যেই আনে না। যে মাধ্যম ব্যবহার করেই প্রপাগা-া চালান না কেন, মানুষ আর আপনাদের সামান্য পরিমাণও বিশ্বাস করে না। শিক্ষক বা বিশেষজ্ঞ হিসেবে শ্রদ্ধা তো করেই না, ঘৃণা করে মন-প্রাণ দিয়ে।
মন বলছিল জিতবে, তবু ভয়ে কাউকে বলিনি
ডা. আবুল হাসনাৎ মিল্টন, চিকিৎসক ও কলামিস্ট
মন বলছিল জিতবে, তবু ভয়ে কাউকে বলিনি। আজকাল মন যা বলে প্রায়ই তার উল্টোটা হচ্ছে। যে মুহূর্তে তরুণীর ভালোবাসায় নিশ্চিত হয়ে ভাসছি, মন বলছে ‘মোরা আর জনমে হংস মিথুন ছিলাম’ সেই ক্ষণে তরুণী তার নতুন প্রেমিককে জানিয়ে দিয়েছে, ‘আর বোলো না, আমিতো মিল্টনের কবিতার ভক্ত ছিলাম। আর ও এইটারে ভাবছে প্রেম!’ আমি মনে মনে ভাবি, ‘কী জানি, তা হতেও পারে! কবিতাকে ভালোবেসে কবির প্রতি তরুণী যে এতটা উদার হতে পারে আমার জানা ছিল না!’
মন তবু বলছিল জিতবে। তারপরও শেষের দিকে এসে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা যেভাবে মাটি কামড়ে পড়েছিল তাতে আবারো টেনশনে পড়ে গেলাম। যা হোক, শেষমেষ বাংলাদেশই জিতল। অনেকদিন পরে অবাক হয়ে দেখলাম, মন যা বলছে তাই সত্যি হলো।
বিজয়ের আনন্দটা আরো বহুগুন বাড়িয়ে দিল লুসা মির্জার গান। খেলা শেষ হতেই দেখি ফেসবুকের ইনবক্সে লুসার সদ্য গাওয়া একটা গান। গানের কথাগুলো যে রকম, লুসা গেয়েছেও সেই রকম। গানটি অফিসিয়ালি রিলিজ পেলে অবশ্যই সবাই শুনতে পারবেন। লুসা মির্জা অত্যন্ত মেধাবী এবং গুণী একজন সঙ্গীত শিল্পী। কিছুটা হেয়ালিপনা এবং শুদ্ধচারী হবার কারণে যতটা খ্যাতি ও পরিচিতি লুসার পাবার কথা, সেটা থেকে তিনি এখনো বেশ দূরে। আমি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এবং সঙ্গীতশিল্পী লুসা মির্জার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
নেভার মাইন্ড বাটলার…
অজয় দাশগুপ্ত, সিডনি প্রবাসী, কলামিস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষক
একদা জমিদার অন্যের ধনে পোদ্দারদের ছেলেপেলারা এমনই করে। জমিদারি শেষ, ভাঙা হাট, হাঁক-ডাক হম্বিতম্বির দিন খতম। ডাক দিলেও কেউ শোনে না। তবু তাদের অহং যায় না। জোর করে প্রজা বানিয়ে রাখা মানুষরা যখন মাথা তোলে, শিরদাঁড়া উঁচিয়ে মেধা, শ্রম ও সাফল্যে তাদের হারিয়ে দেয়, ভূতপূর্ব জমিদার চৌধুরীরা হিতাহিত শূন্য হয়ে নিজের আসল চেহারা দেখিয়ে দেয়। বেচারা বাটলার টের পায় নাই বাটলারের উপরও হাতুড়ি আছে। সূর্য এখন পশ্চিমে নাই আর গতি বদলে পুবে বন্ধু। নেভার মাইন্ড বাটলার। লটস অফ ফানস আর এহেড ইয়েট। সাবাস টাইগার।
প্রত্যেক ধর্মকে তার নিজের আলোকেই মূল্যায়ন করতে হবে
পিনাকী ভট্টাচার্য, চিকিৎসক ও কলামিস্ট
কেউ কেউ বলতে চাইছেন, ক্রিস্টমাসে তো সকল ধর্মের মানুষ উৎসবে শামিল হয়। সেখানে তো কোনো সমস্যা হয় না। আচ্ছা ভাই ক্রিস্টমাস তো যীশুর জন্মের স্মরণ। তো যীশুর জন্ম কি তুষার আচ্ছাদিত ক্রিস্টমাস ট্রির নিচে হয়েছিল? নাকি মধ্যপ্রাচ্যের উষর মরুভূমিতে হয়েছিল? তাহলে ক্রিস্টমাস যীশুর সেমেটিক অতীতকে স্মরণ করতে চায় না কেন? এই বিবর্তিত স্মরণের মধ্যে ধর্ম কতটুকু আর রাজনীতি কতটুকু সেটা বিবেচনা করুন। পরিবর্তিত এই ক্রিস্টমাসের উৎসব এনলাইটেনমেন্টের তৈরি। এনলাইটেনমেন্ট ধর্মকে বদলায়। বদলে দেওয়া ধর্মের সঙ্গে না বদলানো অন্য ধর্মকে মিলিয়ে দেখতে চাওয়া কি সঙ্গত? সকল ধর্মের আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে এজন্যই সেগুলো আলাদা আলাদা ধর্ম। প্রত্যেক ধর্মকে তার নিজের আলোকেই মূল্যায়ন করতে হবে। এক ধর্মের গজ ফিতা দিয়ে আরেক ধর্মের মূল্যায়ন করতে যাওয়া মুর্খামী।
দেবী দেখতে হলে ভিআইপি হতে হবে!
আনিছ আলমগীর
চিরকাল আমি দেবদেবী দেখে এসেছি সাধারণ মানুষ হয়ে। পলাশী-আজিমপুর কলোনিতে থাকাকালে ঢাকেশ্বরী এবং ধানমন্ডি থাকাকালে বাসার পাশে কলাবাগান মাঠের ম-পে যেতে আমাকে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়নি। এমনকি ঢাকেশ্বরীতে আরতি প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণের অতিথিও হয়েছিলাম আমি একবার আয়োজকদের আমন্ত্রণে।
আজ প্রথমবারের মতো বনানীতে পূজা দেখতে এসে জানলাম, ভিআইপি না হলে এই গেইট দিয়ে প্রবেশ নিষেধ। ভিআইপিদের কার্ড পাঠানো হয়েছে। কার্ড দেখাতে হবে। সমস্যা নেই, আমি সাধারণ হয়ে সাধারণের গেইট দিয়ে ঢুকলাম। সেখানেও বাধা। দেবীর কাছাকাছি শুধু ভিআইপিরা যেতে পারবে, বাকিরা বাঁশের ঘেরার ভিতরে, দেবী থেকে অনেক দূরে।
বুঝলাম না আয়োজকদের এই ‘ভিআইপি ফুটানি’ সিদ্ধান্ত দুর্গাকে জনতা থেকে সরিয়ে বন্দি করা হয়েছে, নাকি জনতাকে বন্দি করা হয়েছে দেবীকে না দেখতে।
‘আরও খেল দেখবেন?’
আরিফ জেবতিক, সাংবাদিক ও লেখক
ব্রিটিশ বাটলার আর বাঙাল নাসির গেছে গুলশান-২ এর বাটলার ক্যাফেতে। দোকানজুড়ে মজার মজার সব পেস্ট্রি। বাটলার বলল, ‘দেখ, কীভাবে বিনি পয়সায় পেস্ট্রি খাওয়া যায়, আমি দেখাব।’ তারপর দোকানি যখন একটু অন্যদিকে গেছে, বাটলার থালা থেকে খপাখপ ৩টি পেস্ট্রি নিয়ে পকেটে ঢুকিয়ে ফেলল। তারপর নাসিরের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘দেখলা কেমনে করতে হয়?’
নাসির হেসে বলল, ‘তুমি দেখি মাঠের বাইরেও গাড়লের মতোই কাজ করো! ধরা পড়লে তো ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যাবে। টেকনিক্যাল হতে হবে। ‘বাটলার বলল, ‘দেখাও তো কেমন তোমার টেকনিক!’ এবার দোকান মালিক ফিরে এসেছে ততক্ষণে। এসেই বলল, ‘নাসির ভাই, মাঠে যে খেল দেখালেন!’
নাসির বলল, ‘আরও খেল দেখবেন? পুরাই ম্যাজিক? এই যে দেখেন একটা পেস্ট্রি…’ এটুকু বলেই থালা থেকে একটি পেস্ট্রি হাতে নিল নাসির। তারপর গপ করে মুখে পুরে খেয়ে ফেলল। অনেক মজার পেস্ট্রি। ‘এই যে দেখেন আরেকটা খাচ্ছি’ বলে এবার দ্বিতীয় পেস্ট্রিটাও খেল নাসির। তারপর তৃতীয়বার আরেকটা হাতে নিয়ে আরাম করে খেয়ে ফেলল। তারপর দোকানদারের অবাক হয়ে তাকানো দেখে বলল, ‘আপনি ভাবছেন, পেস্ট্রিগুলো আমি খেয়ে ফেলেছি, তাই না? মোটেও তা না। আপনি হিং টিং ছট বলেন।’
দোকানদার বলল, ‘হিং টিং ছট।’ এখন নাসির মুচকি হেসে বলল, ‘গুড। এবার মিস্টার বাটলারের পকেটে হাত দিয়ে দেখুন। ৩টি পেস্ট্রিই ওর পকেটে চলে গেছে।’