ব্রহ্মপুত্রের পানি বাংলাদেশ ও ভারতের সাথে ভাগাভাগি করবে চীন
লিহান লিমা: ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাংলাদেশ ও ভারতের সাথে ভাগাভাগি করতে প্রস্তুত চীন। চীনের সরকারি গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস জানায়, বহুজাতিক সহযোগিতার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বেইজিং বাংলাদেশ-ভারতের সাথে পানি ভাগাভাগি করতে প্রস্তুত। তবে এর জন্য ভারতের সাথে কোনো চুক্তি করবে না চীন সরকার। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় ইসলামাবাদকে সহায়তা করতে নীরবে পানি বিতর্কে অংশ নিয়েছে চীন। নদীর পানিকে সম্ভাব্য অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে দেশটি।
তবে চীন জানিয়েছে, চীনের সাথে ভারতের সম্পর্ক পানিযুদ্ধে রুপান্তরিত হবে না। এর আগে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম ও বাংলাদেশের আন্ত:সীমান্ত অঞ্চলের পানি প্রবাহের উৎস ব্রহ্মপুত্র নদের তিব্বত অংশের চিয়াকবু নদীতে পানি প্রবাহ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে চীন। যা দুই দেশের পানির গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এছাড়া ২০১৫ সালে তিব্বতে জাম হাইড্রোপাওয়ার স্টেশন চালু করে দেশটি। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাধাগ্রস্ত করার এ প্রকল্পে ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করলে চীন জানায়, ওই প্রকল্পে বার্ষিকভাবে ব্রহ্মপুত্রের মাত্র ০.০২ শতাংশ পানি প্রবাহ লাগবে যার কোনো প্রভাব নিম্নাঞ্চলের দেশগুলোয় পড়বে না। ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়, তিব্বতের পানি প্রবাহ বন্ধ করে শুধু ভারতকে শাসাতে পারবে না চীন। এর প্রভাব পড়বে নদিতীরবর্তী দেশগুলোয়। আন্ত:সীমান্ত নদী লানচাং-মেকং মিয়ানমার, লাওস, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া এবং ভিয়েতনামের পানি প্রবাহের উৎস। ফলে দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে চীনের। এ অবস্থায়, চীন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সাথে লানচাং নদীর পানি ভাগ করার প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে পারে। আর যখন চীন ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্ভরশীল তিনটি দেশের সাথে সমন্বয় করবে এটি চীন এবং ভারতের পানি বিতর্কের সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
অন্যদিকে, গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, পানিসম্পদ উন্নত করার জন্য ভারত ব্রহ্মপুত্র নদের পানি একতরফাভাবে শোষণ করতে চাইছে এবং এটিকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। এতে বাংলাদেশের স্বার্থের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়লেও বাংলাদেশের নিজেদের স্বার্থ আদায় করার জন্য জোর করার ক্ষমতার অভাব আছে। কারণ দেশটির অর্থনীতি ভারতের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। যার ওপর খুব কম নজরই পড়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারত ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী দেশগুলোর সাথে সহযোগিতার হাত বাড়াতে অনিচ্ছুক। কারণ এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ভারত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি