রাজধানীতে কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ তিনজনকে হত্যা
মাসুদ আলম: রাজধানীর ভাষানটেক এলাকার নির্মাণাধীন একটি ভবনের অফিস কক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা প্রফেসর আলী হোসেন মালিক (৫৮)-এর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন। এছাড়া সৈয়দ গ্রুপ রিয়েল এস্টেটের জেনারেল ম্যানেজারও ছিলেন।
গতকাল মঙ্গলবার ভোরে বনানী ওল্ড ডিওএইচএস ২ নম্বর রোডের ৫৩/এ বাড়ির ৩য় তলায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে তাকে হাত-পা বেঁধে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই ভবনের কর্মচারী সেলিমসহ দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অন্য দুই কর্মচারী কর্মচারী পলাতক রয়েছে।
নিহতের ভাই মুমিন মালিক বলেন, প্রায় ৭ বছর আগে আলী হোসেন শিক্ষকতা থেকে অবসরে যান। তিনি জীব বিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন। তিন মাস আগে ওই কোম্পানির মালিক মো. বাবুল মালয়েশিয়া যান। ওই গ্রুপের বনানীতে একটি বহুতল ভবনের কাজ চলছিল। বেশি রাত হলে নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৪র্থ তলায় থাকতেন তিনি। সোমবার রাতে আলী হোসেন মিরপুর ১০ নম্বরের বাসায় ফিরেনি। মঙ্গলবার সকালে নির্মাণাধীন ভবনের তত্ত্বাবধায়করা অফিসের কক্ষে আলী হোসেনের লাশ দেখতে পেয়ে তার স্ত্রী জোৎস্না মালিককে জানায় ।
তিনি আরও বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে এসে দেখি তার হাত-পা বাঁধা লাশ পড়ে আছে। তার গাড়িচালক ও কেয়ারটেকারসহ অন্য স্টাফরা রাতে সেখানে ছিলেন। এরপর আমরা সেখানে যাই। আলী হোসেনের একমাত্র সন্তান খিয়াম সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়াশুনা করছে। তার গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা শহরে। ধারণা করা হচ্ছে ওই অফিসের কর্মচারীরাই তাকে হত্যা করেছে। কিন্তু কেন তাকে হত্যা করা হয়েছে তা বুঝে আসছে না।
এ বিষয়ে ভাষানটেক থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, সকালে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার শরীরে ২-৩টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ওই দুই কর্মচারী ঘটনার সঙ্গে জড়িত। অভ্যন্তরীণ কোনো দ্বন্দ্বের কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় সেলিমসহ দুই কর্মচারীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে সাইফুল ও তার ভাই পলাতক রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ডেমরায় যুবক খুন : ডেমরা এলাকায় মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ (১৭) নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাচাতো বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকায় চাচাতো ভাই মোসলেম তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে মঙ্গলবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০ দিন আগে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে জাহিদের সঙ্গে চাচাতো বোনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে চাচাতো ভাই মোসলেমের সঙ্গে জাহিদের মনোমালিন্য হয়। সোমবার বিকালে মেয়েটি ফোন দিয়ে জাহিদকে ডেমরার রাণিমহল এলাকায় ডেকে নেয়। তারপর থেকে জাহিদকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেয়ের বাবা জাহিদের বাবাকে ফোন করে জানান, জাহিদ তাদের এখানে আছে, তাকে নিয়ে যাও। জাহিদকে উদ্ধার করে অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১টায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সে ভোলার লালমোহনের আব্দুল বারেকের ছেলে। বর্তমানে সে ভাটারা থানার খিলবাড়িরটেক এলাকায় থাকতেন।
নিহতের বাবা আব্দুল বারেক অভিযোগ করে বলেন, জাহিদকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে আহত করে মেয়ের ভাই মোসলেমসহ কয়েকজন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। অধিক রক্ত বমি হওয়ায় তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে ডেমরা থানার ডিউটি অফিসার এসআই আহাদ বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
তুরাগে বস্তাবন্দি লাশ : তুরাগ এলাকা থেকে এক অজ্ঞাত (২০) নারীর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় বাউনিয়া বাঁধ পূর্বপাড়ায় জামিয়া আব্বাসিয়া উলুম মাদ্রাসার পাশ থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে তুরাগ থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান জানান, লাশের গলায় কালো দাগ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লালচে দাগ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে তাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পরে লাশ গুমের উদ্দেশ্যে বস্তা বন্দি করে ফেলে রাখা হয়েছিল। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে বলা যাবে।