সাবেক সেনা কর্মকর্তা খুন এক সপ্তাহেও ধরা পড়েনি কেউ
ইসমাঈল হুসাইন ইমু: সাবেক সেনা কর্মকর্তা ওয়াজি আহমেদ চৌধুরীকে হত্যার ছয়দিন পার হলেও মামলার আসামি গৃহকর্মী আব্দুল আহাদ ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে, উন্নত প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে তাদের ধরার চেষ্টা চলছে।
গত ৫ অক্টোবর মহাখালী ডিওএইচএস এর ৪ নম্বর সড়কের ১৪৮ নম্বরের নিজ বাসায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় ওয়াজি আহমেদকে। পরিবারের অভিযোগ গৃহকর্মী আব্দুল আহাদ (৩০) বাসার বিভিন্ন মালামাল চুরি করার জন্য ওয়াজি আহমেদ চৌধুরীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।
এ ঘটনার পরদিন সকালে নিহতের ভাতিজা রেশাদ আহমেদ চৌধুরী কাফরুল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটিতে গৃহকর্মী আহাদসহ কয়েকজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। গত দুই মাস আগে সিলেটের বিশ্বনাথ এলাকার আব্দুল আহাদকে তার বাসায় গৃহকর্মীর কাজে নিয়োগ দিয়েছিলেন তারা।
রেশাদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, তার চাচা ওয়াজি উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী মহাখালীর ডিওএইচএস-এর বাড়ির ৫ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় থাকতেন। তার এক ছেলেও থাকেন ওই বাড়িতে। গত ৫ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে তার চাচাকে দুর্বৃত্তরা শ্বাসরোধে হত্যার পর কক্ষের বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে চলে যায়। বিষয়টি তারা পরে জানতে পারেন।
রেশাদ চৌধুরী বলেন, ওয়াজি আহমেদ চৌধুরীর ছেলে ফুয়াদ চৌধুরী অসুস্থ থাকায় ওই সময়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। বেলা ১২টার দিকে ঘুম থেকে উঠে তিনি তার কক্ষের বাইরে থেকে তালা দেয়া দেখতে পান। ভেতর থেকে লাথি মেরে দরজা ভাঙ্গতে চেয়েও পারেননি তিনি। এ সময় দরজার ফাঁক দিয়ে তিনি দেখতে পান ডাইনিং রুমের টিভি দেয়ালে নেই। পরে বেলকনি দিয়ে নেমে দেখেন তাদের দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটের মেইন গেটেও তালা। সন্দেহ হওয়ায় তিনি বিষয়টি পিয়ন সন্তোশ মারমা ও সিকে মারমাসহ অন্যদেরও জানান। পরে তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন তার বাবার কক্ষেরও বাইরে থেকে তালা দেওয়া। বাবার কক্ষের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে গিয়ে দেখেন ওয়াজি আহমেদের হাত-পা বাঁধা নিথর মৃতদেহ পড়ে আছে। আর বাসার একটি ল্যাপটপ, একটি মোইল ফোন ও একটি এলইডি টিভি নেই। পরে তাকে উদ্ধার করে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) এ নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রেশাদ চৌধুরী জানান, ঘটনার পর থেকে বাড়ির কাজের ছেলে আব্দুল আহাদ পলাতক রয়েছে। তাদের ধারণা, আহাদই তার সহযোগীদের নিয়ে তার চাচাকে হত্যার পর ল্যাপটপসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কাফরুল থানার ওসি সিকদার শামিম হোসেন বলেন, এ ঘটনায় এখনো আসামিদের কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। গুরুত্ব সহকারে মামলাটির তদন্ত করা হচ্ছে। মাঠে কাজ করছে আমাদের কয়েকটি টিম। তবে আশা করছি, মামলার আসামি বাড়ির কাজের ছেলেসহ হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। প্রযুক্তির সহায়তাও নেয়া হচ্ছে। কিন্তু আসামি আহাদ বারবার স্থান বদল করছে। তাকে ধরতে মাঠে অভিযান চালানো হচ্ছে। তাকে ধরতে পারলেই মূল ঘটনা জানা যাবে বলে আশা করেন তিনি। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম