টেলিনর ইয়ুথ ফোরামের বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে অংশ নিবে ২৬ তরুণ
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: নোবেল পিস সেন্টারের সহযোগিতায় আয়োজিত টেলিনর ইয়ুথ ফোরামের বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে অংশ নিবে ২৬ জন তরুণ প্রতিনিধি। টেলিনর গ্রুপের কার্যক্রম রয়েছে এমন ১৩টি দেশের একশ’ কোটিরও বেশি মানুষের মধ্যে থেকে নির্বাচিত শীর্ষ মেধাবী ২৬ তরুণ টিওয়াইএফ- এ প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এটা বৈশ্বিকভাবে এ যাবৎ টেলিনর পরিচালিত সবচেয়ে বড় কোনো বাছাই প্রক্রিয়া। বৈশ্বিক ও সামাজিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান তৈরিতে তরুণ প্রতিনিধিরা এক বছর ব্যয় করবে।
চতুর্থ বার্ষিক টেলিনর ইয়ুথ ফোরাম (টিওয়াইএফ) এবং এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে টেলিনরের কার্যক্রম রয়েছে এমন ১৩টি দেশ থেকে প্রায় ৫ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী ২৬ মেধাবী তরুণ নির্বাচিত হয়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহার করে সামাজিক নানা সমস্যা সমাধানে তরুণদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে টেলিনর গ্রুপ ও নোবেল পিস সেন্টারের যৌথ উদ্যোগ টিওয়াইএফ।
নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান সপ্তাহ চলাকালে ডিসেম্বরের ৮ থেকে ১১ তারিখ নরওয়ের অসলোতে বছরব্যাপী টিওয়াইএফ প্রোগাম শুরু হবে। টিওয়াইএফ-এ নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রধান প্রধান সামাজিক সমস্যা সমাধানে দলগতভাবে কাজ করার পাশাপাশি এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান মানুয়েল সান্তোসের সম্মানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে।
বছরব্যাপী টিওয়াইএফ কর্মসূচির অংশ হিসেবে অসলোর অনুষ্ঠানের পরেও প্রতিনিধিরা ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে দলগতভাবে কাজ করবে। পাশাপাশি, আগামী বছরের মে মাসে ব্যাংককে তাদের আবার সাক্ষাৎ হবে। সবশেষে ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে নোবেল পিস সেন্টারে তাদের দলগত ভাবনা ও কাজের ডিজিটাল প্রদর্শনী হবে। টিওয়াইএফ উদ্যোগের অন্যতম সহযোগী নোবেল পিস সেন্টার।
টিওয়াইএফ নিয়ে নোবেল পিস সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক লিভ টোরেস বলেন, ‘ইউরোপ ও এশিয়া থেকে তরুণ প্রতিনিধিদের একসাথে এখানে নিয়ে আসতে পেরে এবং তাদের বিশ্বব্যাপী ও সামাজিক সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞ ও সমাধানদাতা হিসেবে তৈরি হবার চ্যালেঞ্জ দিতে পেরে রোমাঞ্চিত। নোবেল পিস সেন্টার বিশ্বাস করে, সামাজিক অসাম্য চিহ্নিত করার মাধ্যমে আমরা শান্তির দিকে আরও এক পা এগিয়ে যাচ্ছি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের প্রত্যাশা তরুণরা পরিবর্তনের সূচনায় তাদের সম্ভাবনার উপলব্ধি করতে পারবে।’
টেলিনর গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিগভে ব্রেক্কে বলেন, যে সব তরুণদের ধারণা, উদ্যম ও সামাজিক নৈতিকতা আছে তাদের ওপর আমরা আস্থা রাখি। প্রযুক্তির ক্ষমতা নিয়ে আমরা আশাবাদী। আমরা মনে করি, দেশের নির্দিষ্ট গন্ডির বাইরেও অন্যের সাথে যোগাযোগ শান্তির ধারাকে ত্বরান্বিত করবে। নতুন কিছু সৃষ্টিতে তরুণরা টেলিনর, এর বিশেষজ্ঞ এবং আমাদের সহযোগী নোবেল পিস সেন্টারের সাথে যুক্ত হয়েছে দেখে আমরা রোমাঞ্চিত।
টেলিনর গ্রুপের কার্যক্রম পরিচালিত হওয়া ১৩টি দেশের একশ’ কোটির বেশি মানুষের এলাকা থেকে শীর্ষ মেধাবী ২৬ তরুণ টিওয়াইএফ প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া এটা এ যাবৎকালে বৈশ্বিকভাবে টেলিনরের পরিচালিত সবচেয়ে বড় কোনো বাছাই প্রক্রিয়া। টেলিনর ইয়ুথ ফোরামে ৪ হাজার ৮শ’র বেশি আবেদন পত্র থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা, ভিডিও সাক্ষাৎকার, অনুষ্ঠানে উপস্থিতি এবং অন্যান্য অনেক বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শীর্ষ তরুণেরা নির্বাচিত হয়।
বাংলাদেশ থেকে দুইজন নির্বাচিত হন। এরমধ্যে রয়েছেন রাফসান শাবাব খান, তার বাড়ি, মানিকগঞ্জে। অপরজন চট্টগ্রামের রামিম আহমেদ।
সমাধান প্রদানে তরুণদের সহায়তা প্রদানে টেলিনর সার্ভিস ডিজাইন এজেন্সি লাইভওয়ার্ককে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিটি দলকেই একজন বিশেষজ্ঞ পরামর্শদাতা সহায়তা করবেন। বিশেষজ্ঞরা দলগুলোকে সমাধান প্রদানে বছরজুড়েই নানা নির্দেশনা দিবেন। অসলো থেকে ব্যাংকক, তরুণদের বিশ্বের কাছে নিয়ে যাবে টিওয়াইএফ। নির্বাচিত তরুণদের জন্য ব্যাংককে আগামী বছরের মে মাসে দ্বিতীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে টিওয়াইএফ। দলগুলোর কাজের বাস্তবায়ন ঘটাতে এটা তাদের জন্য প্রথম ও অন্যতম প্রধান মাইলফলক। টেলিনর ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বিত জুরিবোর্ড তরুণদের কাজের মূল্যায়ন করবে এবং বিজয়ী দল নির্বাচন করবে। আর এর মাধ্যমেই এ বছর টিওয়াইএফ নির্বাচিত তরুণদের কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটবে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে এ বছরের বিজয়ী দল পরবর্তী বছরে টিওয়াইএফ- এ অংশগ্রহণকারীদের অনুপ্রাণিত করতে অসলোতে ফিরে যাবে। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম