বহুরূপী পাকিস্তানি মিডিয়া!
সজল সরকার: গতমাসে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরি সেনা ক্যাম্পে পাকিস্তানি জঙ্গিদের হামলার পর পাকিস্তান ও ভারতের পত্র-পত্রিকাগুলো উত্তেজক সব খবরের মাধ্যমে জমিয়ে রেখেছে পাঠক সমাজ। তবে এক্ষেত্রে ভারতের তুলনায় পাকিস্তানি পত্রিকাগুলোই বেশি রঙ মাখিয়ে খবর প্রচার করছে। উরি হামলার পরেই পাকিস্তানি কিছু পত্রিকা তাদের খবরে বলেছে ভারত নিজেই তাদের সেনা ক্যাম্পে হামলা করে পাকিস্তানি জঙ্গি দলকে দায়ী করা হয়েছে। খবরে সেদেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের মন্তব্যও তুলে দিয়েছে। তবে পাকিস্তানি অনেক সংবাদমাধ্যমই উরি হামলার বিষয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা রিপোর্টের সমালোচনা করেছে।
পাকিস্তানি প্রভাবশালী সাংবাদিক হামিদ মীর জিও টিভিতে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলেন যেখানে হাজারো পাঠক সমর্থন করেছেন। আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে হয়ে পড়া পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সমালোচনাও করা হয়েছে কিছু কিছু পাকিস্তানি মিডিয়াতে। শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার মধ্যে ডন, দ্য নেশন এবং নিউইয়র্ক টাইমস-এর পাকিস্তানি প্রতিনিধি তাদের লেখায় জঙ্গি বিষয়ে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার সমালোচনা করেছে।
সাম্প্রতিক ঘটনায় পাক-ভারতের সম্পর্ক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে ঝড়। লাহোর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আদিল নাজাম স্ট্যাটাস দেন, ‘ভয়ংকর, খুবই ভয়ংকর, যারা নিজেদেরকে অন্যান্য পাকিস্তানিদের চেয়েও বেশি পাকিস্তানি হিসাবে দাবি করে। অতি-দেশপ্রেম জাতির জন্য বিপদও ডেকে আনতে পারে।’
পাকিস্তান ও ভারতের যে সম্পর্ক রয়েছে তা দু’একদিনের নয়, ঐতিহাসিকভাবে দু’দেশের তিক্ত সম্পর্ক দিনের পর দিন চলে এসেছে এবং দায় যখন পাকিস্তানের তখন তারা শক্ত কোনো কূটনীতিক না বসিয়ে সময়ের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। এ পর্যন্ত পাকিস্তান যেসব কূটনীতিক অফিস বসিয়েছে সেখানকার কূটনীতিক কর্মকর্তারা মোটামুটি গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়ান কারণ কর্তৃপক্ষ স্বয়ং এ ব্যাপারে উদাসীন। পাকিস্তানি শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার পরামর্শ যখন কাজে লাগান না সরকার তখন আরও ১০টা পত্রিকা পাঠকপ্রিয়তা পেতে মুখরোচক খবর লিখবে তা-ই স্বাভাবিক। সূত্র : হ্য হুট। এফএ। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম