এশিয়ান গার্ল হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড জিতলেন সোওয়াতকন্যা হাদিকা
রোকন রাইয়ান: চলতি বছর ‘এশিয়ান গার্লস হিউম্যান রাইটস অ্যাম্বাসেডর অ্যাওয়ার্ড’ জিতেছেন পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সোওয়াত জেলার কিশোরী হাদিকা বাশির। তার বয়স ১৫। অ্যাওয়ার্ডটি পাকিস্তান এই প্রথমবারের মতো জিততে সক্ষম হলো। সূত্র: ডন ও ডয়েচেভেলে উর্দু
অ্যাওয়ার্ডটির জন্য এশিয়ার ৪ কিশোরী তালিকাভুক্ত ছিলেন। তাইওয়ানে জমজমাট এক অনুষ্ঠানে হাদিকার হাতে তুলে দেওয়া হয় অ্যাওয়ার্ড।
অ্যাওয়ার্ডটি গত আগস্টে কোয়েটার হাসপাতালে আত্মঘাতী হামলায় নিহত এবং নিপীড়িত কাশ্মীরিদের উৎসর্গ করেন তিনি। অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ অনুষ্ঠানে নিজের বক্তৃতায় হাদিকা কাশ্মীরিদের উপর ভারতীয় সেনাদের হামলার ব্যাপারে সংযত হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি পুরো এশিয়ার নারীদের আরও অগ্রগতির জন্য সবাইকে আওয়াজ তোলার আহ্বান জানান। হাদিকা বলেন, ফিলিস্তিন, কাশ্মীর এবং মিয়ানমারের নারীরা নির্যাতনের শিকার। এসব অঞ্চলে নারীদের অধিকারে সবাইকে আরও সোচ্চার হতে হবে।
হাদিকা বাশার পাকিস্তানের বাল্য বিয়ে বন্ধে কাজ করছেন। তার এসব কাজ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। তিনি মনে করেন, বাল্য বিয়ে বন্ধ করে শিশুদের পড়ালেখার সুযোগ করে দিতে পারলেই অগ্রগতি সম্ভব।
হাদিকা বাশার ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। শিক্ষার পাশাপাশি তিনি নারীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। সুযোগ পেলেই তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাল্য বিয়ে বন্ধের ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতন করেন। মাঝে মাঝেই স্কুল-কলেজ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সেমিনারের আয়োজনও করেন। এসব অনুষ্ঠানে স্বতস্ফূর্তভাবে সারা দেয় মানুষ।
পাকিস্তানের সোওয়াত এলাকাটি সন্ত্রাসীদের টার্গেট দীর্ঘদিন ধরেই। কম বয়সী নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই এ এলাকারই বাসিন্দা। সন্ত্রাসীদের হামলায় যিনি জীবন হারানোর শঙ্কায় ছিলেন।
সোওয়াতে সন্ত্রাসীদের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করেই এগিয়ে যাচ্ছে হাদিকা বাশার। হাদিকার শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে একটু কম শুনতে পান। কিন্তু জীবন চলার পথে একে কোনো বাধাই মনে করেন না হাদিকা। তার অ্যাওয়ার্ডটি ভবিষ্যতের কাজে আরও অনুপ্রাণিত করবে বলেই মনে করেন তিনি। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি