স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনে আটকে আছে বিচার
মামুন খান: পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে পুরান ঢাকার হোসেনি দালানে জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলার ঘটনার মামলার বছর পার হলেও এখনো বিচার শুরু হয়নি। ছয় মাস আগে চার্জশিট দাখিল করা হলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলার বিচার কাজ আটকে আছে। মামলায় গ্রেফতার হওয়া চার্জশিটভুক্ত ১০ জঙ্গির মধ্যে ইতোমধ্যেই চার জঙ্গি জামিনে বের হয়েছে।
এ সম্পর্কে ডিবির উপকমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, তাজিয়া মিছিলে হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলাটির তদন্ত শেষ হয়েছে। গত ২০ এপ্রিল মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলা বলে চার্জশিট দাখিলের বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। ওই হামলায় ১৩ জঙ্গি জড়িত ছিল। তাদের শনাক্ত করে আমরা ১০ জনকে গ্রেফতার করি। অভিযানের সময় তিন জঙ্গি ক্রসফায়ারে মারা যায়। চার্জশিটভুক্ত ১০ আসামির সবাই জেএমবির সদস্য।
চার জঙ্গির জামিনের বিষয়ে তিনি বলেন, চার জঙ্গির জামিনের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় তাদের জামিনে থাকার কথা না। তবে চার জঙ্গি জামিন পেয়ে থাকলে তা বিজ্ঞ আদালতের এখতিয়ার।
তিনি আরও বলেন, জঙ্গিরা দেশের জন্য কতটা ভয়াবহ তা সাম্প্রতিককালের ঘটনাগুলো থেকেই বোঝা যায়। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলাগুলোয় চার্জশিট দেওয়া হলে সেখানে আমরা বলে দিই যে, এদের (জঙ্গি) জামিন দিলে আবারও তারা জঙ্গি তৎপরতা চালাতে পারে।’
মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে আদালত পুলিশের উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, এ মামলা সম্পর্কে জানাতে পারবেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আমি শুধু এটুকুই জানি- এখন পর্যন্ত পুলিশ প্রতিবেদন আদালতে আসেনি। জামিনে থাকা আসামিদের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে কতজন আসামি জামিনে আছে- তা রেকর্ড দেখা ছাড়া বলা যাবে না।
মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেনÑ শাহাদাৎ ওরফে আলবানি ওরফে মাহফুজ ওরফে হোজ্জা, আবদুল বাকি আলাউদ্দিন ওরফে নোমান, সাঈদ ওরফে হিরন ওরফে কামাল, জাহিদ হাসান ওরফে রানা ওরফে মোসায়েব, আরমান, রুবেল ইসলাম ওরফে সজীব, কবির হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আশিক, মাসুদ রানা, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাহমুদ, আবু সাঈদ সোলায়মান ওরফে সালমান, শাহ জালাল, ওমর ফারুক ওরফে মানিক ও চাঁন মিয়া।
সূত্রে জানা গেছে, চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে প্রথম তিনজন ডিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এদের মধ্যে গত বছরের ২৫ নভেম্বর গাবতলীতে নিহত হয় হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী শাহাদাৎ ওরফে আলবানি ওরফে মাহফুজ। গত ১৩ জানুয়ারি রাতে হাজারীবাগে নিহত হয় অপর দুই জেমবি কমান্ডার আবদুল বাকি ওরফে আলাউদ্দিন ওরফে নোমান ও সাঈদ ওরফে হিরন ওরফে কামাল।
সূত্র আরও জানায়, চার্জশিটভুক্ত ১০ আসামির মধ্যে ওমর ফারুক ওরফে মানিক, শাহ জালাল, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাহমুদ ও চাঁন মিয়া জামিন পেয়েছেন। বাকি ছয় আসামি কারাগারে রয়েছেন। মামলাটিতে আগামী ৩ নভেম্বর পুলিশ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৩ অক্টোবর রাত পৌনে ২টার দিকে তাজিয়া মিছিলে জামাআ’তুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেমবি) জঙ্গিরা বোমাহামলা চালায়। সম্পাদনা: শাহানুজ্জামান টিটু