শি-এর সফর একটি আঞ্চলিক কূটনীতির অংশ
বিশ্বজিৎ দত্ত : চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের বাংলাদেশ সফর শুধুমাত্র একটি অর্থনৈতিক সফরই নয়। এর পিছনে একটি আঞ্চলিক কূটনীতিও কাজ করছে বলে মনে করছেন অনেকেই। উল্লেখ্য,৩০ বছরের মধ্যে কোনো চীনা প্রেসিডেন্টের এটিই প্রথম বাংলাদেশ সফর। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাব বৃদ্ধির বিপরীতে চীনও তার প্রভাব বলয় বাজায় রাখতে চায়। প্রধানত এই উদ্দেশ্যেই ভারতে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনে যোগদানের পরপরই তিনি কম্বোডিয়াও সফর করবেন। এর আগে তিনি পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়াও সফর করেছেন।
কূটনৈতিকদের মতে, ভারতের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক খুব ভাল নয়। এই দুই বৃহৎ প্রতিবেশী মাঝে মাঝে একসঙ্গে হলেও তারপরেই বিরোধে জড়িয়েছে। চীনের প্রতিষ্ঠাতা মাওসেতুং ভারত সফরে এসে ভারতের তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহেরুকে বলেছিলেন, চীন ও ভারত পরস্পর ভাই। তার এই সফরের পরেই ভারতকে আক্রমণ করে চীন। পরে অবশ্য চীন যুদ্ধ ছাড়া নিজেরাই ভারতীয় এলাকা ছেড়ে চলে যায়। তবে ভারতের দাবি অরুণাচলের অনেক এলাকা চীন এখনো দখল করে রেখেছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার বক্তৃতায় বলেছেন, আগামীতে বিশ্ব অর্থনীতির প্রধান নিয়ন্ত্রক হবে ভারত ও চীন। সুতরাং ক্রমবর্ধমান এই দুই অর্থনীতি নিজেদের বাজার সম্প্রসারণেও অনেকটা ¯œায়ুযুদ্ধের পর্যায়ে রয়েছে। এর বাইরে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে, ভারত পাকিস্তান বিরোধ। বিশেষ করে কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের বিরোধের পর এসম্পর্ক আরও জটিল হয়েছে। এ বিষয়ে পাকিস্তানকে সরাসরি সাপোর্ট করেছে চীন। তাকে আশ্বাসও দিয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হলে চীন পাকিস্তানকে সাপোর্ট করবে। এই প্রেক্ষাপটে চীন ও ভারত পরস্পর বিপরীত দিকেই দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া থেকে পাকিস্তানকে কার্যত একলা করে দিয়েছে ভারত। ইসলামাবাদে সার্ক সম্মেলন না হওয়াও পাকিস্তানের জন্য একটি কূটনৈতিক পরাজয়। বাংলাদেশের সঙ্গেও পাকিস্তানের সম্পর্ক ভাল নয়। পাকিস্তানে ৪০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে চীন। চীন,পাকিস্তান,উজবেকিস্তান নিয়ে একটি বাণিজ্যিক কড়িডর করার কথাও রয়েছে। ভারতও এগিয়ে রয়েছে এই দিক দিয়ে তারাও বাংলাদেশ , ভুটান, মিয়ানমার ও নেপালকে নিয়ে অন্য একটি কড়িডর করার চিন্তা করছে। এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আঞ্চলিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছে। ভারতের এই আঞ্চলিক উদ্যোগ সফল হবে যদি বাংলাদেশ সহায়তা করে ভারতকে। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম