নিউইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদন সাইবার জগতে তারকাদের হম্বি-তম্বি আসলে ভাবমূর্তি তৈরির কৌশল!
সীমান্ত: টিভি রিয়েলিটি শো তারকা রব কার্দেশিয়ান পারিবারিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হলেই টুইটারে টুইট করেন। গত মাসের শেষের দিকে তিনি টুইট করেছিলেন, আপনারা আমার বাচ্চার জন্য যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন সেখানে আমার বাচ্চার মাকেই দাওয়াত দেননি!! তার হবু স্ত্রী ব্ল্যাক চায়না এবং কার্দেশিয়ান ও জেনারদের মাঝে যে দ্বন্দ্ব চলছে সেটি উসকে দিতেই তার এই টুইট। টুইটে তিনি আরও বলেন, আপনারা সবাই নিজেদের বুদ্ধি হারিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে তিনি নিজের ছোট বোন কাইলি জেনারের ফোন নাম্বার টুইটে দিয়ে দেন।
রব কার্দেশিয়ান তার বোন কাইলি জেনারের ব্যক্তিগত তথ্য তার অনুমতি ছাড়াই ইন্টারনেটে প্রকাশ করেছেন। এই ধরনের কৌশল প্রতিপক্ষকে হেনস্তা করা, ভয় দেখানো বা চুপ করানোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই টুইটটি রব কার্দেশিয়ানের সবচেয়ে জনপ্রিয় টুইট হিসেবেও প্রতীয়মান হয়েছে।
সর্বশেষ কিছু দিন যাবৎই তারকাদের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব সাইবারজগতে হম্বি-তম্বির রূপ নিচ্ছে। ইন্টারনেটে তারা একজন আর একজনকে হেনস্তা করার চেষ্টা করছে। যদিও এটি দেখে অনেকের কাছে মনে হতে পারে অপরিপক্কতার উদাহরণ কিন্তু এটি আসলে বেশিরভাগ সময় নিজের ভাবমূর্তি তৈরির কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। জনসংযোগের ক্ষেত্রে এধরনের কৌশল বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে। কিন্তু এই খেলার একটি অন্ধকার দিকও রয়েছে বিশেষত যারা হেরে যান তাদের জন্য।
বর্তমানে তারকারা যে ধরনের ডিজিটাল মাধ্যমকে এই যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন সেগুলো হল:
গোপন রেকর্ডিং- অনেক সময় তারকা নিজের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য গোপন রেকর্ডিং ব্যবহার করে থাকেন। গোপন রেকর্ডিং-এ এমন কথোপকথন থাকে যেটি সে তারকা ছাড়া আর কেউ জানতেন না এবং এই কথোপকথন তাকে না জানিয়ে রেকর্ডিং করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমরা এই গোপন রেকর্ডিং-এর ব্যবহার দেখেছি।
যৌন হয়রানি- গত জানুয়ারি মাসে উইজ খালিফা এবং কেন ওয়েস্ট তাদের সাবেক প্রেমিকা অ্যাম্বার রোজকে নিয়ে টুইটারে বাগযুদ্ধ শুরু করেন। তখন অ্যাম্বার তার সাবেক প্রেমিক ওয়েস্টকে অপদস্ত করার জন্য দাবি করেন ওয়েস্ট এর সাথে তার শারীরিক সম্পর্ক ছিল।
রিভেঞ্জ পর্ন- কোলয়ি গ্রেস মর্তেজ কার্দেশিয়ান ও টেইলর সুইফট এর মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিয়ে টুইট করেছিলেন। প্রত্যুত্তরে কিম কার্দেশিয়ান-এর বোন কোহলি কার্দেশিয়ান মর্তেজ এর সাথে মিল রয়েছে এমন একটি ছবি পোস্ট করেন। ছবিটিতে দেখা যায় মহিলাটির পিছনের কাপড় খুলে পড়ায় পেছনের দিকে অনাবৃত হয়ে পড়েছে।
ভক্তদের উসকে দেয়া- অনেক সময় তারকারা নিজেদের ফ্যানদেরকে তার প্রতিপক্ষের প্রতি উসকে দেন। অনেক সময় ভক্তরা বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের প্রিয় তারকার প্রতি সমর্থন জানায়।
আপনার কাছে মনে হতে পারে এধরনের দ্বন্দ্বের ফলে তারকারা নিজেদের ভক্তদের আতঙ্কিত করে তোলেন। তবে ব্যাপারটি মোটেও এরকম না। তারকাদের এই দ্বন্দ্বকে পুঁজি করে বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমই নিজেদের জনপ্রিয়তা বজায় রাখে। কিন্তু এই ধরনের বিশ্বাস মাঝে মাঝে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। আবার অনেক সময় এই ধরনের দ্বন্দ্ব বুমেরাং হয়ে ফিরেও আসতে পারে। যেমন গত মে মাসে র্যাপ সঙ্গীত শিল্পী আজেইয়িলা বাঙ্ক পপ স্টার জায়ান মালিককে নিয়ে টুইটারে বর্ণবাদী টুইট করেছিলেন এবং এটি টুইটারে হেনস্তা আইন এর আওতায় পড়ায় তার টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়।
এই ধরনের দ্বন্দ্ব সাধারণত নিজেদের ভক্ত বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে কিন্তু অনেক সময় এটি বাস্তব জীবনেও প্রভাব ফেলে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি