ট্রাম্পের নারীঘটিত সংবাদ প্রত্যাহারে নিউইয়র্ক টাইমসের ‘না’
মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে :
দুই নারীর শ্লীলতাহানির সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনজীবীর প্রেরিত ‘ডিমান্ড অব র্যাট্রেকশন’ বা ‘সংবাদ প্রত্যাহারের দাবি’ নাকচ করে দিয়েছে প্রভাবশালী পত্রিকা দৈনিক নিউইয়র্ক টাইস। গত বৃহস্পতিবার পত্রিকাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও অ্যাসিসট্যান্ট জেনারেল কাউন্সিল ডেভিড ম্যাকক্রো ফ্যাক্সে প্রেরিত এক পত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনজীবী মার্ক ই. কেসোউইচ এস্কোয়ারকে তার দাবির জবাবটি দিয়েছেন। তার বঙ্গানুবাদটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
এ বছরের ১২ অক্টোবর ডিন ব্যাকোয়েটকে পাঠানো আপনার মক্কেল যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্সিয়াল প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পসংক্রান্ত পত্রের জবাব দিচ্ছি। আপনি আমাদের ‘টু ওমেন সে ডোনাল্ড ট্রাম্প টাচ্ড দেম ইনঅ্যাপ্রোপ্রিয়েটলি’ অর্থাৎ ‘দুই নারীর দাবি ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের অসংযতচিত্তে ছুঁয়েছেন’ প্রতিবেদনটির বিষয়ে লিখেছেন এবং প্রতিবেদনটিকে ‘লাইবেল পার সি’ বা ‘মানহানি’ হিসেবে গণ্য করেছেন। আপনি বলেছেন, আমরা ‘(আমাদের) ওয়েবসাইট থেকে তা সরিয়ে নেই এবং পূর্ণাঙ্গ ক্ষমা চেয়ে তাৎক্ষণিক তা প্রত্যাহার করে নেই’। আমরা তা নাকচ করে দিচ্ছি।
অবশ্যই মানহানির মোদ্দা দাবিটি হচ্ছে কারও সম্মান সুরক্ষা করা। মিস্টার ট্রাম্প নারীদের অনুমতিহীনভাবে স্পর্শের বড়াই করেছেন। তিনি সুন্দরী প্রতিযোগীদের প্রসাধন কক্ষে হানা দেওয়ার বড়াই করেছেন। মিস্টার ট্রাম্প একজন রেডিও উপস্থাপকের অনুরোধে নিজের মেয়েকে ‘পিস অব অ্যাস’ বা ‘পশ্চাদাংশ’ বলতে সম্মত হয়েছেন। আমাদের প্রতিবেদনে স্থান না পেলেও জনসমক্ষে অনেক নারীই মিস্টার ট্রাম্পের অনধিকার আগ্রাসনের বিষয়ে রিপোর্ট করেছেন। আমাদের প্রতিবেদন তাতে মিস্টার ট্রাম্পের সামান্যতম সম্মানহানি করেনি, বরং তার কথা ও আচরণই করেছে।
কিন্তু তার চেয়েও বিশাল ও গুরুত্ববহ দিকটি তাতে রয়েছে। যে নারীকে আমাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তার কথাটি জাতীয় গুরুত্বে তুলে ধরা হয়েছেÑ অবশ্যই গত রোববার রাতে প্রদর্শিত বিতর্কে মিস্টার ট্রাম্প সে বিষয়টি জাতির সামনে আলোচনা করেছেন। আমাদের প্রতিবেদকরা নারীদের ঘটনাবলি যথাযথভাবেই ধারণ করেছেন। তারা পাঠককে যেমন মিস্টার ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, তেমনি ওই নারীদের দাবির প্রতি তার জোরালো অস্বীকারোক্তিটিও তুলে ধরেছেন। এটা কেবল পাঠকের প্রতি অহিতসাধন হতো না, বরং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাদের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করা হতো। আমরা আইনানুগ কাজটি করেছি- আমরা জনস্বার্থে সুগভীর একটি বিষয়ে সংবাদতুল্য তথ্য প্রদান করেছি। যদি মিস্টার ট্রাম্পের তাতে অনীহা থাকে, যদি তিনি বিশ্বাস করেন ওই নারীদের কথা শোনার অধিকার আমেরিকানবাসীর নেই এবং এ দেশের আইন যদি আমাদের বাধ্য করে, সাহসী যারা তার সমালোচনায় নিশ্চুপ ও শাস্তিপ্রাপ্য হবে, আমরা তা হলে স্বাগত জানাই কোর্টই তার সুবিচার করবে।