বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ লুট সিঙ্গাপুর থেকে ফিরেছে সিআইডির তদন্ত দল, চতুর্থ বৈঠক নভেম্বরে ঢাকায়
সুজন কৈরী : সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ লুটের ঘটনার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির প্রতিনিধি দল। গত ৬ অক্টোবর রাতে দলটি দেশে ফিরে।
এর আগে ইন্টারপোলের আয়োজনে সিআইডির দুই সদস্যদের প্রতিনিধি দলটি গত ৪ থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে একটি কো-অর্ডিনেশন বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিআইডির অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো. শাহ আলম ও অ্যাডিশনাল এসপি রায়হান উদ্দিন খান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই সদস্য। এটি ছিল রিজার্ভ চুরির ঘটনায় তৃতীয় কো-অর্ডিনেশন বৈঠক। এর আগে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় গত ৩০ মে থেকে ২ জুন প্রথম বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয়টি ইন্টারপোলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়।
সিআইডির অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো. শাহ আলম বলেন, ইন্টারপোলের আয়োজনে বৈঠকে বাংলাদেশ, ফিলিপাইন ও চীনসহ ৬টি দেশ সরসরি অংশগ্রহণ করে। এছাড়া শ্রীলঙ্কাসহ দুটি দেশ টেলি কনফারেন্সে অংশ নেয়। এছাড়া ওয়ার্ল্ড ব্যাংকও এই বৈঠকে ছিল। আটটি দেশের মোট ২৫ জন প্রতিনিধি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। দেশগুলোর সঙ্গে ঘটনার তদন্তের বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। প্রাইমারি ঘটনার তদন্তে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। সেকেন্ডারি লেভেলে আরও বেশ কিছু তথ্য-উপাত্ত প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে ফিল্ড অপারেটিভ যারা আছে; তাদের পেছনে থাকা ব্যক্তিদের সনাক্ত করতে আরও তথ্য-উপাত্ত প্রয়োজন। কাজ করতে হবে। এই বিষয়ে সবার সহযোগিতা চেয়েছি। কেউ কেউ সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন। এখানে আমাদের কিছু আনুষ্ঠানিকতা লাগবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা আমাদের কাছে কিছু তথ্য চেয়েছে আবার আমরাও কিছু তথ্য চেয়েছি। তিনি বলেন, বৈঠকে মুখোমুখি হলে তদন্তে অনেক সুবিধা হয়। যেমন বৈঠকে আমরা রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ২৩ জনের তালিকা দিয়েছি। যেখানে ফিলিপাইনের বাইরের লোকজনও রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়াসহ তাদের কল ডিটেইল বের করে দেখা যেতে পারতো বলে আমরা বৈঠকে জানিয়েছি। আমরা বলেছি, টাকাটা যার কাছে গেছে; তারাই মূল কাজটি করেছে। ভুয়া এ্যাকাউন্ট খুলেছে। টাকাটা জুয়ার বোর্ডের মাধ্যমে ফিলিপাইন থেকে বের করে নিয়েছে। কিন্তু ফিলিপাইনও একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ফিলিপাইনের বাইরে ও ভেতরে যারা আছে; তাদের খুঁজে বের করার পর জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার বিষয়ে জানা উচিত। এছাড়া অ্যাফেক্টিভ কান্ট্রি ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নিয়মিত ক্রিমিনাল কেস হওয়া জরুরি বলে বৈঠকে আমরা বলেছি। এখন পর্যন্ত ঘটনায় জড়িত কোনো দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীই কাউকে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। ক্রিমিনাল কেসের তদন্তের অংশ হিসেবে কাউকে কোনো প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়নি। এ বিষয়গুলো আমরা বৈঠকে উত্থাপন করেছি। এছাড়া ঘটনার তদন্তের বিষয়ে একে অপরকে সাহায্য করার কথা বলেছি। তদন্তে সহযোগিতা চেয়েছি। তাদের পক্ষ থেকেও সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সর্বোপরি সব মিলিয়ে একটি ভালো কো-অর্ডিনেশন বৈঠক হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগামী নভেম্বরে চতুর্থ বারের মতো আরেকটি কো-অর্ডিনেশন বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম