কাশ্মীরে গেরিলা হামলা : ২ এসএসবি সদস্য নিহত, আহত ৮ ফারুক আবদ্ল্লুাহ বললেন ‘যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়’
ইমরুল শাহেদ: কাশ্মীরে আল আমের মুজাহিদিন গ্রুপের হামলায় সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি)-এর দুই সদস্য নিহত এবং আটজন আহত হয়েছে। উর্দু দৈনিক দুনিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রুপটির মুখপাত্র মোশতাক হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছেন। হামলায় নিহত হওয়া দুই সদস্যের একজনের নাম ঘনশ্যাম। আহতদের শ্রীনগর সেনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কাশ্মীর এ্যাজ জানিয়েছে, এ হামলার ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীনগর শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে জাকুরায়। এসএসবি সদস্যদের বহনকারী গাড়িটি তখন টহল শেষ করে ক্যাম্পে ফিরে আসছিল। তবে এ হামলায় প্রকৃতপক্ষে হতাহতের সংখ্যা কত তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায়নি। এসএসবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের নয়জন সদস্য হামলায় আহত হয়েছিল। হাসপাতালে নেওয়ার পর একজন মারা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইউএনআই জানিয়েছে, হামলার সময়কাল এক থেকে দুই মিনিট হবে। তবে এ সময়ে ভারী গোলার শব্দ পাওয়া গেছে।
হামলাকারীরা কমপক্ষে ৫০ রাউন্ড গুলি চালায়। জওয়ানদের পক্ষ থেকে পাল্টা গুলি চালিয়ে জবাব দেওয়া হলেও হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এসএসবির মহাপরিদর্শকের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছেন। গতকাল শনিবার মহাপরিদর্শক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কাশ্মীর এ্যাজ জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী অকুস্থলের আশপাশের এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, শনিবার থেকে কাশ্মীরজুড়ে জারি থাকা কারফিউ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তবে উপত্যকায় জনগণকে সমাবেশের অধিকার দেওয়া হচ্ছে না। বহাল থাকছে ১৪৪ ধারা। কাশ্মীর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতির ‘উল্লেখযোগ্য উন্নতি’ হওয়ায় কারফিউ উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাত থেকেই প্রিপেইড মোবাইলের আউটগোয়িং কলের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও মোবাইল ইন্টারনেট এখনো বন্ধ রয়েছে। তবে কারফিউ প্রত্যাহারের পরও কাশ্মীরের জনজীবন পুরোপুরি স্বাভাবিক ধারায় না ফিরলেও রাস্তায় আগের চেয়ে যানবাহন সংখ্যা বেড়েছে। শনিবার ছিল চলমান উত্তাল আন্দোলনের ৯৯তম দিন। এদিকে, কাশ্মীরের স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠনগুলোর জোট হুরিয়ত কনফারেন্স-এর ডাকা হরতাল আজও বহাল আছে। ধারণা করা হচ্ছে আন্দোলনের শততম দিনেও বেশিরভাগ দোকান, অফিস-আদালতই বন্ধ থাকবে।
জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের সভাপতি ফারুক আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে ভারত-পাকিস্তান আলোচনার টেবিলে বসা উচিত।’ শুক্রবার রাজ্যের বিরোধীদলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ওই মন্তব্য করেন।
ফারুক আবদুল্লাহ বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীরের শান্তি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। সমস্যা সমাধানে ভারত-পাকিস্তানের আলোচনার টেবিলে বসা উচিত। আলোচনার মাধ্যমেই কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হবে। যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়।’