বিরোধী নেত্রীর সঙ্গে বৈঠক না করে সরকারকে বার্তা দিল চীন : বিএনপি
কিরণ সেখ: ‘বর্তমান সংসদ জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় এবং তারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন না’Ñ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশ সরকারকে এমনই বার্তা দিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, আমি মনে করি, শি জিনপিংয়ের এ সফর রাষ্ট্রপতির সফরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি সরকারকে পরিকল্পিতভাবে ম্যাসেজ দিয়ে গেছেন। সে কারণে এ সফর ভূ-আঞ্চলিক রাজনীতি হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া তিনি বর্তমান বিরোধী দলের নেত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেননি। কারণ চীনের প্রেসিডেন্ট জানেন, জনগণের নেত্রী হচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বর্তমান বিরোধী দলের নেত্রী নন। সে কারণে চীনের প্রেসিডেন্ট সরকারকে ইঙ্গিত ও ইশারায় বলেছেন, জনগণই তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ মন্তব্য করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান।
তিনি বলেন, অন্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা দেশে এলে সরকারপ্রধান, রাষ্ট্রপতি, সংসদের বিরোধী দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু চীনের প্রেসিডেন্ট সংসদের বিরোধী দলের সঙ্গে বৈঠক না করে পরিষ্কার বার্তা দিয়ে গেছেন।
‘চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর ভূ-আঞ্চলিক রাজনীতির নতুন বার্তা’ শীর্ষক এ সভায় তিনি বলেন, চীনের রাষ্ট্রপতির মূল বার্তা ছিল, বাংলাদেশের সব সংকটে চীন আমাদের পাশে থাকবে। এ কারণে ‘শি জিনপিং’ এ সফরে ২৭টি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। জনগণ ও বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এসব চুক্তি প্রযোজ্য। সেহেতু বিএনপি প্রত্যাশা করে, সকল স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে দুদেশের জনগণের উন্নয়নের জন্য এসব চুক্তি বাস্তবায়ন করা হবে।
মোশাররফ হোসেন বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট সরকারকে আরও একটি বার্তা দিয়ে বলেছেন, সরকার আসে যায়। তাই চীনের কাছে জনগণই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য বিএনপি সরকার এশিয়া হাইওয়ে প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। এতে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও উন্নত হতো। কিন্তু পরবর্তীতে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় না থাকায় ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। এসময় তিনি এশিয়া হাইওয়ে বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
চীনের বৈদেশিক নীতিকে বিএনপি বিশ্বাস করে জানিয়ে মোশাররফ বলেন, ছোট-বড় মিলেমিশে থাকতে হবে। একে অপরের সঙ্গে যুদ্ধ নয়Ñ চীনের এই নীতিসহ সব নীতিতে আমরা বিশ্বাসী।
বাংলাদেশের উপর অনেকের শ্যেনদৃষ্টি রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে কম মূল্যে শ্রমশক্তি পাওয়া যায় এবং আমাদের বঙ্গোপসাগরে রয়েছে অফুরন্ত সম্পদ। এ কারণে আমাদের ওপর অনেকের দৃষ্টি রয়েছে। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি