ওমর শাহ : পাকিস্তানের জিও টিভির নির্বাহী সম্পাদক হামিদ মীর বলেছেন, ২০১৬-তে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের নামে এ অদ্ভুত মিথ্যা ছড়িয়ে দিয়ে মিথ্যাবাদীতে ভারত দশ কদম এগিয়ে গেছে। পাকিস্তানের দৈনিক জং পত্রিকার প্রকাশিত কলামে তিনি এ মন্তব্য করেন। গত ৩ অক্টোবর ‘মূল বিষয় কাশ্মীর নয়’ শিরোনামে প্রকাশিত কলামে হামিদ মীর এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাতের অন্ধকারে সীমান্ত রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ওপর হামলা করে ভারত দাবি করেছে দশজন চরমপন্থীকে হত্যা করে তারা নিরাপদে ফিরে গিয়েছে। এ মিথ্যা পাকিস্তান ও ভারতের মাঝে ব্যবধানকে আরও বাড়িয়ে দিল।
বিখ্যাত এ সাংবাদিক বলেন, এটা ঠিক, দুর্নীতি এখানেও হয় ওখানেও হয়, সেখানেও জনগণের সামনে মিথ্যাচারকারীদের বারবার ভোট দেওয়া হয়, এখানেও জনগণের সামনে মিথ্যাচারকারীদের বারবার ছেড়ে দেওয়া হয়। ভারতে ধর্ম নিরপেক্ষ আইনের ছায়ায় গরুর গোস্ত ভক্ষণকারীদের হত্যা করে দেওয়া হয় আর পাকিস্তানে ইসলামের নামেই ইসলামী প্রতিষ্ঠানকে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া হয়। সেখানে মাহাত্মা গান্ধীকে এক হিন্দু আর ইন্দিরা গান্ধীকে এক শিখ হত্যা করেছে আর এখানে লিয়াকত আলী খান ও বেনজির ভুট্টোকে একজন মুসলমান হত্যা করে।
হামিদ মীর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে পাকিস্তান সামরিক সহায়তায় দিয়ে কঠিন ক্ষয়-ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। এখন ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে সামরিক সহায়তা দিয়ে চীনের বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে প্রস্তুত রয়েছে। পার্থক্য এই, আমরা আগে ব্যবহৃত হয়েছি, ভারত পরে হচ্ছে। যখন পাকিস্তান আমেরিকার ঐক্য ছিল ভারত রাশিয়ার সঙ্গে মিলে পাকিস্তানকে ভেঙ্গে দেয়। ভারতের ধারণা ছিল, পাকিস্তান ভেঙ্গে দিলে কেউ আর তার ওপর রাজত্ব দেখাবে না। কিন্তু পাকিস্তান ভেঙ্গে পরমাণু শক্তিধর দেশে পরিণত হয়েছে। যদি ভারত পরমাণু অস্ত্র তৈরি না করত তাহলে পাকিস্তানেরও পরমাণু অস্ত্র বানানোর প্রয়োজন হতো না।
তিনি বলেন, ঘৃণা কোথায় বেশি? ভারতে নাকি পাকিস্তানে? পাকিস্তান ও ভারতের মাঝে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হচ্ছে, অধিকাংশ পাকিস্তানিরাই হিন্দুস্তানকে সমর্থন দিয়েছিল কিন্তু অধিকাংশ হিন্দুস্তানিরা পাকিস্তানকে সমর্থন দিতে পারেনি। আমি এর ওপর মত দিতে পারছি না যে, ভারত ও পাকিস্তানের বিবাদের মূল কারণ কাশ্মীর ইস্যু। আর যতক্ষণ পর্যন্ত এ বিষয়টি সমাধান না হবে এ দুদেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না। হিন্দুস্তানের আসল বিষয় কাশ্মীর নয়, পাকিস্তান। কাশ্মীর ইস্যু সমাধান হলে ভারত পাকিস্তানের ঘৃণা কমে আসবে তা নয়। এ ঘৃণা অটুট থাকবে এবং বৃদ্ধি পাবে। এ ঘৃণার মূল কারণ মূর্খতা। মূর্খতা এখানে সেখানেও। কিন্তু হিন্দুস্তানে এ মূর্খতা বেশি। দু’দেশেরই আসল বিষয় মূর্খতা। দু’দেশের শিক্ষিত মানুষরাই মূর্খদের দ্বারা পরিচালিত। দু’দেশই একে অপরের প্রতি নয় মূর্খতার বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিত। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম