হাসান আরিফ: দারিদ্র্য বিমোচন এবং সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যে অভিভূত বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। সরেজমিনে বাংলাদেশের এ সাফল্য দেখতে আনুষ্ঠানিক সফরে গতকাল বিকালে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান জিম ইয়ং কিম। দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের উদ্যোগ সরেজমিনে বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের এ সফর বিশ্ব দরবারে হ্ইালাইট হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জিম ইয়ং কিমকে শাহজালাল বিমানবন্দরে স্বাগত জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন, বিশ্বব্যাংক সদর দফতরে বাংলাদেশের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইয়া। ঢাকায় বিশ্ব ব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি চিমিয়াও ফানসহ সংস্থার কর্মকর্তারাও বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
এই সফরে ‘বিশ্ব দারিদ্র্য বিমোচন দিবস’ বাংলাদেশে পালনের পাশাপাশি ঢাকায় একটি বক্তৃতাও দেবেন কিম। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলন শেষ করেই ঢাকায় এলেন দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে আসা দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক কিম। এর আগে ২০০৭ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের তখনকার প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোয়েলিক।
জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর পর বিশ্বব্যাংকের কোনো প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফরে আসছেন। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম’কে ঘিরে সরকারের প্রত্যাশার পারদ কতটুকু জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের প্রত্যেক প্রেসিডেন্টই বাংলাদেশে এসেছেন। দু’একজন ছাড়া। তাই জিম ইয়ং কিমের সফরটা হবে ‘ওয়েলকামিং ভিসিট’।
জানা গেছে, কিমের এ সফরকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রতিবছর তাদের সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি করছে। তার এ সফরকালে সহযোগিতা সম্প্রসারণের নতুন ঘোষণা আসতে পারে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে পদ্মাসেতু প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়ার পরে এটাই হবে সংস্থাটির সর্বোচ্চ পদাধিকারীর প্রথম বাংলাদেশ সফর। পদ্মাসেতুতে অর্থায়ন নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের যে তিক্ত স্মৃতি রয়েছে, জিম ইয়ং কিমের সফর তা মুছে দেবে বলে আশা করছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। কয়েক বছর আগে পদ্মাসেতু নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার পর গত অর্থবছরে বাংলাদেশকে ঋণের অর্থ ছাড় আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি করেছিল বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের লিড ইকনোমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন আগেই হয়েছে। বাংলাদেশ দরিদ্র লোকের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে । সেটি অন্য দেশের জন্য শিক্ষণীয়। ব্র্রান্ডিংয়ের জন্য বাংলাদেশ বিশাল অবস্থান তৈরি করেছে। প্রেসিডেন্টের এ সফর আজ উৎসবে পরিনত হয়েছে।