ইসমাঈল হুসাইন ইমু : হঠাৎ করেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের কয়েকশ’ অ্যাম্বুলেন্স উধাও হয়ে গেছে। নেই রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে গাড়ি নিয়ে দেন দরবার। এছাড়া হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে থেকে অবৈধ ফুটপাতও উঠে গেছে। শনিবার হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে অ্যাম্বুলেন্সচাপায় শিশুসহ তিনজন নিহত ও ৫ জন আহতের ঘটনার পর থেকে এ অবস্থা চলছে।
এদিকে অনিবন্ধিত বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স পরিচালনা মালিক সমিতি এ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘট পালন করছে বলে জানা গেছে। একাধিক এ্যাম্বুলেন্স চালকদের সঙ্গে কথা বলে এ কথা জানা গেলেও প্রকাশ্যে সমিতির পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি। তবে গতকাল সকাল থেকে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঢামেক হাসপাতালে এলেও কোনো রোগীকে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করে হাসপাতাল ছাড়তে দেওয়া হয়নি। মাঝেমধ্যে দু’একটি এ্যাম্বুলেন্স এসেছে ঢাকার বাইরে থেকে। তাদের অন্য রোগীদের নিয়ে যেতে দেখা যায়।
অপরদিকে হাসপাতালের সামনে কোনো এ্যাম্বুলেন্স না থাকলেও দালালরা ছিল তৎপর। কোনো রোগীর স্বজন গাড়ি খুঁজছে এমনটা টের পেলেই তার কাছে ছুটে এসেছে দালাল। কোথায় যাবে কত ভাড়া তাও নির্ধারণ করতে দেখা যায়। তবে গাড়ি কোথায় আছে তা জানায়নি দালালরা। তারা বলেছে দরকার হলে চলে আসবে। এতগুলো অ্যাম্বুলেন্স হঠাৎ করে হাসপাতাল এলাকা থেকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে একজন চালক বলেন, নেতাদের নির্দেশে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে খবর দিলেই চলে আসবে।
গতকাল দুপুরে দোয়েল চত্বরের সামনে দুটি খালি অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। মিন্টু নামের একজন চালক বলেন, সকাল থেকে কোনো রোগীর ট্রিপ পাইনি। নেতারা বলেছেন গাড়ি না বের করতে। কিন্তু পেটের দায়ে দূরে দাঁড়িয়ে আছি যদি ট্রিপ পাই বলেন তিনি।
মহসিন নামের অপর এক চালক বলেন, নোয়াখালী যাবার জন্য একটি খ্যাপ পাওয়া গেছে। কিন্তু হাসপাতলের সামনে গেলে সমস্যা আছে। মালিক সমিতির লোকজন ঝামেলা করবে তাই এখানে আছেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, শনিবার সকালে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পুলিশ ক্যাম্পের সামনে অ্যাম্বুলেন্সচাপায় শিশুসহ তিনজন নিহত হন। আহত হন পাঁচজন। আহতদের মধ্যে ছিলেন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা আমেনা বেগম ও তার পাঁচ বছরের ছেলে সজীব। আমেনা বেগমকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়ার পর অস্ত্রোপচার করা হলে মৃত সন্তান প্রসব করেন তিনি। এরপর আইসিইউতে নেওয়া হয় তাকে। সেখানে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর পুলিশ বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স রেকার করে এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেশকিছু গাড়ি সরিয়ে দেয়। সম্পাদনা: আজাদ হোসেন সুমন