খুন ছিনতাইসহ রাজধানীতে অপরাধ কমছে
আজাদ হোসেন সুমন: খুন, ডাকাতি, অপহরণ ও ছিনতাইসহ রাজধানীর সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি হ্রাস পাচ্ছে দিন দিন। এক সময় নগরবাসী নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় থাকলেও এখন সেই অবস্থা অনেকটা কেটে গেছে বলে মনে করছেন অপরাধ বিশ্লেষকরা।
ডিএমপির বার্ষিক সমীক্ষা পর্যবেক্ষণে জানা যায়, ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে রাজধানীতে ২২টি ডাকাতি, ১৩৮টি খুন, ১৩৪টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ সময় ৪৯৫ জনকে গ্রেফতার করে। পক্ষান্তরে ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে রাজধানীতে ২০টি ডাকাতি, ১২৫ খুন ও ১০৯টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। উল্লেখিত সময় বিভিন্ন অপরাধে জড়িত
অভিযোগে পুলিশ ৪০৪ জনকে গ্রেফতার করে। ডিএমপির এ অপরাধ পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ৩ ডাকাতি, ১৭ খুন ও ১১টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ২০১৫ সালের একই মাসে ৪ ডাকাতি ১২ খুন ও ১২টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৩ ডাকাতি ১০ খুন ও ২০টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। একই বছরের মার্চে ১৫ খুন ও ৯টি ছিনতাই, এপ্রিলে ১৬ খুন ১৫টি ছিনতাই মে মাসে ১৩ খুন ১৩ ছিনতাই, জুনে ২টি ডাকাতি ১২টি খুন ও ১২টি ছিনতাই, জুলাই মাসে ৬টি ডাকাতি ১৩টি খুন ও ১৭ টি ছিনতাই, আগস্টে ৪ ডাকাতি, ২২ খুন ও ২০টি ছিনতাই, সেপ্টেম্বরে ৪ ডাকাতি, ১৬ খুন ও ২১টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পক্ষান্তরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৩ ডাকাতি, ১০ খুন ও ২৬টি ছিনতাই, মার্চে ১৫ খুন, ৯ ছিনতাই, এপ্রিলে ১৬ খুন, ১৫ ছিনতাই, মে মাসে ৪ ডাকাতি, ১৩ খুন ও ১৩ ছিনতাই, জুনে ২ ডাকাতি, ১২ খুন ও ১২ ছিনতাই, জুলাই মাসে ২ ডাকাতি, ১৮ খুন ও ১০ ছিনতাই, আগস্টে ৩ ডাকাতি ১৩ খুন ও ৭টি ছিনতাই ও সেপ্টেম্বর মাসে ২ ডাকাতি ১৬ খুন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া গতকাল তার দফতরে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশ এখন অনেক সক্রিয়। মাঠপর্যায়ে কর্মরত পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা দিনরাত পেট্রলিং করছে নগর জুড়ে। তা ছাড়াও থানার ওসিরাও তৎপর থেকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কাজ করছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট জোনের ডিসিরা যার যার মত অপরাধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। ডিএমপির এই টিমওয়ার্কের কারণে অপরাধীরা নিজেদের গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। তিনি বলেন, এক সময়ের ‘আন্ডারওয়ার্ল্ড’ এখন বিলীন। নগরীর কোথাও অপরাধীরা সংঘবদ্ধ হলেই পুলিশি অভিযানের মুখে পড়তে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের আন্তরিক সদিচ্ছার কারণে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তিনি বলেন, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী জনগণের জান-মালের নিরাপত্তার কথা ভাবেন এবং সে অনুযায়ী শত ব্যস্ততার মাঝেও তিনি আমাদের পুলিশ বাহিনীর খোঁজ-খবর রাখেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে নগরীর পরিবাগ এলাকার গৃহিণী সালমা খাতুন বলেন, আগে যত চুরি, খুন ছিনতাইয়ের ঘটনার কথা শুনতাম এখন অনেকটা কম শুনি। তিনি আরও বলেন, আমরা ঈদসহ বিভিন্ন সময় নির্বিঘেœ মার্কেট থেকে কেনাকাটা করে বাসায় ফিরি। কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। সাবেক আইজিপি অপরাধ বিশ্লেষক মোদাব্বির চৌধুরী বলেন, তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি অপরাধের ধরনও বদলেছে। সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। পুলিশ দৃঢ়তা সাহসিকতার সাথে জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করতে সক্ষম হওয়ায় জনমনে পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে কিছুটা হলেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম