গ্ল্যামার জগতের স্বাদ গ্রহণের আগেই বিতর্কে বুবলি
ইমরুল শাহেদ: গ্ল্যামার জগতের স্বাদ গ্রহণ করার আগেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন নতুন নায়িকা বুবলি। তাকে নিয়ে এ বিতর্ক নিছকই তার ব্যক্তি জীবন নিয়ে। পত্র-পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ প্রচার করছেন বুবলি একাধিকবার বিয়ে করেছেন। তিনি সাত বছরের একটি সন্তানের জননী। কিন্তু কেউ বলতে পারেননি সন্তানটির পিতৃ পরিচয় কি বা কোন বিয়ের এবং কার সঙ্গে বিয়ের ফসল। বুবলি সবেমাত্র চিত্রজগতে পা রেখেছেন। এ পর্যন্ত ছবি রিলিজ হয়েছে দুটি- শুটার ও বসগিরি। দুটি ছবিতেই তার নায়ক শাকিব খান। তৃতীয় ছবি মা-তে তিনি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। সেটিতেও তার নায়ক শাকিব খানই। মুক্তি পাওয়া দুটি ছবিতে বুবলি উৎরে গেছেন বা যাননি সেটা আপেক্ষিক বিষয়। প্রশ্ন হচ্ছে, বুবলিকে নিয়ে যে গুজব রটেছে তার সত্যতা কতটুকু বা অসত্য হলে এ রটনার তাৎপর্য কি? এমন তথ্য সাংবাদিকদের কাছেই বা কারা পৌঁছাচ্ছে।
ঢাকার চলচ্চিত্র এখন বলতে গেলে প্রায় তারকাশূন্য। পরীমনি বা মাহী এখন নির্মাতাদের কাছে হিসেবে আসছে কম। নুসরাত ফারিয়াকে দিয়ে চলচ্চিত্রের কোনো লাভ হবে না। অনেকেই তাকে উচ্চাভিলাষী বলে থাকেন। আরও কিছু নায়িকা আছেন যাদের নিয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন আছে মনে হয় না। এ সময়ে বুবলিকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যুক্তিসঙ্গত নয় বলেই অনেকে মনে করছেন। বুবলির কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এসব তথ্যের কোনোটিই সঠিক নয়। আমি বিবাহিত হলে সবাই এক সময় জানতে পারবে। স্বামী-সন্তান-সংসার লুকিয়ে রাখার মতো কোনো ব্যাপার নয়। আজ সন্তান রেখে আমি যদি তাকে অস্বীকার করি তাহলে বড় হয়ে একদিন সন্তানও আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। স্বামী অস্বীকার করা গেলেও একজন মা কখনো সন্তান অস্বীকার করতে পারেন না। আমার সম্পর্কে যা বলা হচ্ছে তা নিছকই গুজব।’
কোনো নায়িকা বিবাহিত হওয়া বা সন্তান থাকা দোষের কোনো ব্যাপার নয়। চম্পা এক সন্তানের জননী হয়েই চলচ্চিত্রে এসেছেন এবং একের পর এক ব্যবসা সফল ছবি দিয়েছেন। বিয়ের পরও শাবানার জনপ্রিয়তায় বিন্দুমাত্র ধস নামেনি। এখনো দর্শকরা শাবানাকে পর্দায় আশা করেন। বুবলি যদি বিবাহিত হন বা তার কোনো সন্তান থাকে তাতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু সত্য গোপন করাটাই হলো দোষের। এক সময় সব কিছুরই অবসান ঘটে সত্য উদঘাটিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। বুবলি বলেছেন, ‘আমি এ ধরনের ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানি না। সত্য তো সত্যই।’
এ কথা সত্য যে গুজব হলো তারকা জগতের অলংকার। গুজবহীন তারকা অনেকটা জড় পদার্থের মতোই। অন্যান্য দেশে, বিশেষ করে হলিউড, বলিউডে অর্থের বিনিময়ে গুজব রটানো হয়। সবারই লক্ষ্য থাকে ছবিটিকে নিরঙ্কুশ দর্শক গ্রাহ্য করে তোলা। সে অর্থে বলা যায়, গুজব হচ্ছে ছবিটিকে জনপ্রিয় করে তোলার এবং তারকার প্রতি দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণের একটি সফল ফর্মুলা। কিন্তু এদেশের সাংস্কৃতিক আবহে গুজব কথাটি লালিত হয় নেতিবাচক দিক থেকে। বিদেশি তারকাদের নিয়ে লেখা নানা গুজব এদেশের মানুষ সানন্দে উপভোগ করলেও এদেশের তারকাদের নিয়ে লেখা গুজব তারা হজম করতে পারে না। এখন অবশ্য দৃশ্যপট পাল্টাতে শুরু করেছে। বিদেশি সংস্কৃতির নানা উপকরণ আকাশ দিয়ে সহজেই ঘরের খোলা জানালা দিয়ে প্রবেশ করছে। প্রথম প্রথম সেটা অনীহার কারণ হলেও গোয়েবলীয় তত্ত্বের মতো এখন ক্রমশ গ্রাহ্যতার মধ্যে চলে আসছে।
জিএমজির এক সময়ের বিমানবালা এবং পরে সংবাদপাঠিকা হওয়া বুবলি বলেন, ‘আমি হঠাৎ করে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে বিব্রতবোধ করছি। কারণ এমন পরিস্থিতির কখনো মুখোমুখি হইনি। হয়তো এটা এক সময় গা সওয়া যাবে।’ সম্পাদনা: সুমন ইসলাম