আওয়ামী লীগের সম্মেলন আমন্ত্রণ পেলে সম্মেলনে যাবে রাজনৈতিক দলগুলো
রফিক আহমেদ: আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনের সময় ঘনিয়ে আসছে। এবারের সম্মেলন হবে বেশ জাঁক-জমকপূর্ণ, দলের পক্ষ থেকে বারবার এই ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। দেশ বিদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ দেওয়ার ঘোষণাও রয়েছে বেশ জোরালোভাবে।
দলের অভ্যর্থনা কমিটির প্রধান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, বিদেশীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সাড়াও মিলেছে। ১৪টি দেশের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা আসবেন বলে জানিয়েছেন এখন পর্যন্ত। তবে কৌশলগত কারণে তারা বিষয়টি বলতে নারাজ।
দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বাকি দলগুলোকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে ইতোমধ্যে মোহাম্মদ নাসিম জানিয়েছেন। কিন্তু আমাদের অর্থনীতির পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে , অনেকেই জানান তারা এখনো আমন্ত্রণ পাননি অনেকেই। কেউ কেউ এই আমন্ত্রণ পেয়েছেন বলে জানান। তবে আমন্ত্রণ পেলে দলগুলো আওয়ামী লীগের সম্মেলনে অংশ নেবেন বলে প্রত্যাশা করেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বিএনপিকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে কিনা এটা তারা বলতে পারবেন। কারণ দাওয়াতপত্র এখনো আমাদের হাতে এসে পৌঁছেনি। দাওয়াত পেলে সম্মেলনে যোগদান করার বিষয়টি সিদ্ধান্ত হবে দলীয়ভাবে।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, এখনো আওয়ামী লীগের সম্মেলনের কোনো আমন্ত্রণ পাইনি। আওয়ামী লীগ ডাবল ষ্ট্যান্ডার্ড মেন্টেইন করে চলে। দলটি সব সময় বৈষম্য সৃষ্টি করে থাকে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওয়ালাদার বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাজসজ্জা থাকাটাই স্বাভাবিক। সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতা পেলেও স্বতন্ত্রের নামে ঢাকা সিটি করপোরেশনের উত্তর ও দক্ষিণের আওয়ামী লীগের দুই মেয়র জাতীয় পার্টির সম্মেলনের সময় আমাদেরকে রাস্তায় গেট করতে দেয়নি। তারা আমাদের ব্যানার ও ফেস্টুনও লাগাতে দেয়নি। কিছু কিছু গেট করার পর তা ভেঙ্গে দিয়েছে। যার ফলে আমরা সঠিকভাবে জাতীয় পার্টির সম্মেলন করতে ব্যর্থ হয়েছি। তিনি বলেন, আমরা এখনো আওয়ামী লীগের সম্মেলনের কোনো আমন্ত্রণ পাইনি। তবে আমন্ত্রণ পেলে দলটির প্রতি সম্মান ও শুভেচ্ছা জানানোর জন্য জাতীয় পার্টির একটি টিম পাঠাব।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগ প্রায় সব দলকেই গতানুগতিক আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বিদেশি অনেক অতিথিও আসতে পারেন। আওয়ামী লীগের এ সম্মেলনে বড় শোডাউন-আওয়ামী লীগ বিরোধী মতাদর্শ ও সরকারি কার্যক্রম, দুর্নীতিবিরোধী শক্তির মুখ বন্ধ করা, প্রতিবাদকে শৃঙ্খলিত করা, আন্দোলনের মাঝে হতাশা তৈরী করা ও বিকল্পহীন অবস্থার পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগকে মেনে নেওয়ার শর্তও তৈরী করতে চায়। তবে এ সম্মেলন পরবর্তীতে বাইরের আঘাতের চেয়েও অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক পরিস্থিতিগত জটিলতা মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আমাদেরকে আবশ্যই আমন্ত্রণ জানাবে। তবে জামায়াতকে আমন্ত্রণ না জানালে আমরা আবশ্যই যাব। কিন্তু সম্মেলনকে ঘিরে দলটির সাজসজ্জার ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করব না।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সম্পদের বড় অপচয় করে আওয়ামী লীগ সাজসজ্জা করে সম্মেলন করছে। দলটি রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা নিয়ে সম্মেলন করছে। একইভাবে বিরোধীদলগুলোর প্রতি যদি সহানুভূতি দেখানো হতো তাহলেই সার্থক হতো। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পথে হাঁটছে, আর সরকার দমন পীড়নের আশ্রয় নিয়ে চলেছে। সরকারি দল গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করবে আমরা এটাই চাই। তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের কোনো আমন্ত্রণ এখনো পাইনি। বিশ্ব ব্যাংক বিরোধী অবস্থান নিয়েও বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা করছে সরকার, বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসা তারই বহিঃপ্রকাশ। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি