আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যাচ্ছেন না খালেদা জিয়া ও মির্জা ফখরুল
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: আওয়ামী লীগের আসন্ন কাউন্সিলে বৃহৎ বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। ওই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে কার্ড পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে খালেদা জিয়া ও মির্জা ফখরুল এখনো মুখ খোলেননি। তবে তাদের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে খালেদা জিয়া ও মির্জা ফখরুল যোগ দিচ্ছেন না। যদিও বিএনপির অফিস থেকে ও খালেদা জিয়ার কার্যালয় থেকে দাওয়াতপত্র প্রাপ্তির কথা গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে স্বীকার করা হয়নি।
এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ আমাদের পার্টি প্রধান ও মহাসচিবকে দাওয়াত করেছেন বলে বলছেন। তারা দুজন ব্যক্তিকে দাওয়াত করেছেন। পার্টি হিসেবে বিএনপিকে দাওয়াত করেননি। এখন এ দাওয়াত হয়েছে আওয়ামী লীগের তরফ থেকে ব্যক্তিগত দাওয়াত। ব্যক্তিগত দাওয়াতে যাওয়ার আগ্রহ এখনো পর্যন্ত বিএনপির নেই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এ দাওয়াত না দিতে পারলে দিত না। আসলে লোক দেখানোর জন্য দাওয়াত দিয়েছে। আওয়ামী লীগের মতো পার্টি বিএনপির ২০ জনকে দাওয়ার দেওয়ার সামর্থ্য রাখে না এটা আমরা মনে করি না। কিন্তু সামর্থ্য থাকলেও তারা সে কাজটি করেনি। তিনি বলেন, এটা ইচ্ছে করেই আওয়ামী লীগ করেছে যাতে করে বিএনপি না যায়।
খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, বিএনপির কাউন্সিল করার জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। সরকার নথিপত্র পর্যন্ত অফিস থেকে তল্লাশি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আর কাউন্সিল করার ভেন্যু দেওয়া নিয়ে সরকার অনেক টালবাহানা করে। যেখানে আমাদের দলের একটি কাউন্সিল করার জন্য সরকার অনুমতি দেয় না। সেখানে সে দলের কাউন্সিলে আমাদের নেত্রী ও মহাসচিব কেন যাবেন। সরকারি দলতো তাদের ইচ্ছে মতো ভেন্যু নিয়েছে। তাদের যেমন খুশি তেমনভাবে কাউন্সিল করছে। আমাদের তো করতে দেয়নি। তাহলে এ ধরনের একটি অনুষ্ঠানে আমরা কেন যাব।
বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আসলে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা চায় না। সুসম্পর্কও চায় না। বিশেষ করে বিএনপিকে মাইনাস করার ও রাজনীতি থেকে নাম মুছে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। সেখানে কি যাওয়ার সুযোগ আছে? এছাড়াও আমাদের যে দুই নেতাকে দাওয়াত দিয়েছেন তাদের নামে কত মিথ্যে মামলা দিয়েছে এ সরকার ও আওয়ামী লীগ। তাদের সুযোগ পেলেই কারাগারে নিয়ে যাবে। কিন্তু পারছে না জনগণের ভয়ে। এ অবস্থায় আমাদের ওই নেতারা যাবেন না এটাই জানি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপিকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে এমনটি আমার জানা নেই। আমাদের ম্যাডাম ও মহাসচিবকে ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে শুনেছি। সে দাওয়াতে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে তারা যাবেন এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আলোচনাও হয়নি। তিনি বলেন, আমি যতখানি জানি তারা যাবেন না। এরপর কোনো সিদ্ধান্ত হলে সবাইতো দেখবেন। ম্যাডাম প্রয়োজন মনে করলে এটা নিয়ে আলোচনাও করতে পারেন নেতাদের সঙ্গে।
খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ একজন নেতা বলেন, ম্যাডাম ওই দাওয়াতে যাচ্ছেন না এটা নিশ্চিত। মহাসচিবও যাবেন না বলে জানি। তবে এটা নিয়ে ম্যাডাম চাইলে আলোচনা করতে পারেন। এরপর সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন। এদিকে তারা না গেলেও কোনো প্রতিনিধি পাঠানো হবে কিনা জানতে চাইলে ওই নেতা বলেন, সে সম্ভাবনাও কম। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম