সুন্দরবন রক্ষা করা মুক্তিযুদ্ধেরই অংশ : অধ্যাপক সিরাজুল
নিজস্ব প্রতিবেদক: সুন্দরবনবিনাশী রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে সুন্দরবন রক্ষা করা মুক্তিযুদ্ধেরই অংশ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে যেমন পরাজয় চিন্তা করিনি। তেমনি এই বন রক্ষার আন্দোলনে পরাজয়ের স্থান নেই’।
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির উদ্যোগে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন।
সুন্দরবনবিনাশী রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি প্রদানে সমাবেশ ও ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে মিছিলের আগে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, ‘সুন্দরবন রক্ষার লড়াইয়েও পরাজয়ের জায়গা নেই’।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যে নিজেদের সম্পদ রক্ষা করতে পারি না। আমাদের রক্ষকরা যে ভক্ষকে পরিণত হয়েছে, তা প্রমাণ হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। আমাদের এই দেশ দীর্ঘকাল বিদেশিদের অধীনে ছিল। বিদেশিরা আমাদের সমস্ত সম্পদ লুণ্ঠন করত। আমরা ভেবেছিলাম, একাত্তরে তার মীমাংসা হয়ে গেছে, এই দেশের সম্পদ দেশের মানুষের থাকবে এবং এখানে কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ ঘটবে না। কিন্তু আমরা দেখছি একের পর এক আমাদের সম্পদ বিপন্ন হচ্ছে, ধবংস হচ্ছে, বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এই যে সুন্দরবনের উপর আক্রমণ হচ্ছে, এই আক্রমণ যদি পাকিস্তান আমলে হতো, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ বাঘের মতো গর্জে উঠতো। কিন্তু আজকে যখন সুন্দবনকে ধ্বংস করার চক্রান্ত পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে, তখন আমাদের সেই গর্জন নেই। আমাদের যারা রাজনীতিবিদ, তারা ক্ষমতার দ্বন্ধে লিপ্ত, বিদেশি শক্তিকে তোয়াজ করছেন। বুদ্ধিজীবীরা কোনো আওয়াজ দেন না’।
তিনি আরও বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীরা নীরব থাকেন বা তারা সমর্থন করেন। ছাত্ররাও প্রতিবাদ করত সব সময়। সে প্রতিবাদ এখন স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকরা এখন অতীতের মতো গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন না। এখন জনগণই ভরসা। যেমন- একাত্তরের যুদ্ধে জনগণ রুখে দাঁড়াতে হয়েছিল হানাদারদের বিরুদ্ধে, আজকেও এই সম্পদ রক্ষার জন্য দেশের মানুষকেই দাঁড়াতে হবে’।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ অসমাপ্ত রয়ে গেছে। ওই মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের কোনো স্থান ছিল না’। কর্মসূচিতে জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সুন্দরবন আজ অরক্ষিত। একে রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে’। সম্পাদনা: রিকু আমির