সাফল্য এককভাবে কারো দাবি করা সঠিক হবে না : বিএনপি
শাহানুজ্জামান টিটু: বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনের যতটুকু সাফল্য এসেছে, এটা শুরু হয়েছে দীর্ঘকাল আগে। দারিদ্র্য বিমোচনের ব্যাপারটা যদি কেউ এককভাবে দাবি করেন, তা সঠিক হবে না বলে মনে করে বিএনপি। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনের যে প্রশংসা করেছেন এবিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনের শুরুটা করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। পরবর্তিকালে প্রতিটি সরকারই এর জন্য কাজ করেছে। বিশেষ করে আমি বলব, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক ও ব্রাকসহ অন্যান্য এনজিও দারিদ্র্য বিমোচনে বড় ভূমিকা পালন করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল এসব কথা।
গ্রামীণ অর্থনীতিকে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ক্ষুদ্র ঋণের ধারণা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মাইক্রো ক্রেডিট অর্থাৎ মাইক্রো ফাইন্যান্স যেটা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের ধারণ, যা জিয়াউর রহমানের সময়ে থেকেই শুরু হয়েছিল। তখনই গ্রামীণ অর্থনীতিতে পূঁজিকে নেওয়ার একটা চেষ্টা হয়েছে। তারই ফলোশ্রুতিতে আমাদের অর্থনীতিতে একটা বড় রকমের পরিবর্তন এসেছে। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি এখন বাংলাদেশে বড় অর্থনীতি। এসব কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটা মোমেন্টাম হয়েছে। অর্থাৎ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার সক্ষমতা তৈরি হলো যা গ্রামের মানুষের মধ্যে পুরো বিষয়টা বিকশিত হয়েছে।
৭৪ সালে আওয়ামী লীগের আমলে যে দুর্ভিক্ষ হয়, সে সময় অনেকে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। কিন্তু আমরা দেখেছি, পরবর্তীকালে যখন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সরকারের দায়িত্ব নিয়েছেন, তিনি তার ১৯ দফা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উৎপাদন-উন্নয়নের যে জোয়ার সৃষ্টি করেছিলেন, সম্পূর্ণ নতুন একটা ধারা সৃষ্টি করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের বাংলাদেশ- যোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, অনুন্নত এলাকা উন্নয়নে রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী বোর্ড, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড গঠন করে জিয়াউর রহমান শিল্পায়নের ব্যবস্থা করেছেন। ওইসব অঞ্চলে শিল্পে বিনিয়োগের জন্য ২% রেটে সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন। এসব অঞ্চলে শিল্প গড়ে উঠেছিল, কৃষিতে বিপ্লব হয়েছিল।
জিয়াউর রহমান একটা বদ্ধ অর্থনীতিকে মুক্ত করে দিয়েছিলেনÑ এ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করায় গ্রামীণ অর্থনীতিতে একটা প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। আজ গ্রামে যে বিদ্যুৎ দেখছেন, পল্লিবিদ্যুৎ বোর্ড তিনিই গঠন করেছেন। এছাড়া জিয়াউর রহমান গ্রামের অর্থনীতিকে সচল করার জন্য সকল কর্মকা- নিয়ে যাচ্ছিলেন গ্রামের দিকে।
নারীদের ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিএনপি মহাসিচব বলেন, দারিদ্র্য দূর করার অগ্রগতির পেছনে সকলের কিন্তু অবদান রয়েছে। বিশেষ করে খালেদা জিয়া সরকার আমলে গ্রামের ছেলে-মেয়েদের লেখা-পড়ার সুবিধার জন্য ফুড ফর এডুকেশন চালু করেছিলেন। যাতে ৩০ কেজি গম পেতো যদি বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাতো। এটা একটা বড় রকমের ইনসেনটিভ ছিল। নারীদের বিনামূল্যে বই-পত্র প্রদান, দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক লেখা-পড়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছিল। এ কাজগুলো তখন হয়েছে। আমি মনে করি, এই ভিত্তিগুলোর জন্য আজকে গ্রামে দারিদ্র্য কমে এসেছে।