জামায়াতের নতুন আমীর মকবুল ৭১’ রাজাকার-কমান্ডার ছিলেন হত্যার অভিযোগও রয়েছে
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : জামায়াতে ইসলামীর নবনির্বাচিত আমীর হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন মকবুল আহমাদ। বিগত ৬ বছর ধরে মকবুল ভারপ্রাপ্ত আমীরের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দ- কার্যকর হওয়া দলটির সাবেক আমীর মতিউর রহমান নিজামীর গ্রেফতারের পর থেকেই মকবুল দায়িত্ব পালন করছিলেন।
তবে নতুন এই আমীরের বিরুদ্ধেও রয়েছে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে যখন জামায়াতের শীর্ষ ১০ নেতার যখন অপরাধ প্রমাণিত হলো এবং ৬জনের ফাঁসির রায় কার্যকর হলো এবং জামায়াতের পক্ষ থেকে ঘোষণা এলো তারা যুদ্ধাপরাধমুক্ত দল চায় তখনই একই অপরাধে দুষ্ট মকবুলকে কেন দলীয় প্রধান করা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গেছে, জামায়াতের নতুন এই আমীরও ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে ফেনী জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মীর আবদুল হান্নান বলেছেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। তারই নির্দেশে ফেনীর স্থানীয় রাজাকার, আলবদর বাহিনীর সদস্যরা ফেনী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন নেতা মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা ওয়াজ উদ্দিনকে চট্টগ্রামে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।
তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল এমপি বলেছেন, আমি আগে বলেছি। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের তার ভূমিকা তদন্ত করা হোক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থাকে তার বিষয়ে তদন্ত করার আহ্বান জানান এম এ আউয়াল। গত বছরের মে মাসে ফেনী শহীদ মিনার চত্বরে মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতাবিরোধী ও রাজাকারদের তালিকাভুক্ত ২০০ জনের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়ে। ফেনী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ও ক্ষতিগ্রস্ত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছিলেন।
উল্লেখ্য গত সোমবার কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে মকবুল আহমাদের শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের কিছু সদস্যের সামনে তাকে শপথ পাঠ করান দলটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম মাসুম।
দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, মকবুল আহমাদ শান্ত, শিষ্ট ও ‘মুখলিস’ (সৎ) মানুষ। তার নেতৃত্বে জামায়াত সঠিকভাবে পরিচালিত হবে। যেটি বিগত ৬ বছরে তার ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বকালেই পরিষ্কার হয়ে গেছে। নেতাকর্মীদের মতে, বিগত বছরগুলোয় দলটির শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি হওয়ার পরেও দল হিসেবে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে জামায়াত। এর পেছনে অবদান মকবুল আহমাদের দৃঢ় নেতৃত্বের। সিলেট জেলা দক্ষিণের আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য মাওলানা হাবিবুর রহমান বলেন, তিনি মকবুল আহমাদ ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে ছিলেন। তার দূরদর্শী নেতৃত্বে রুহানিয়ত যেমন বৃদ্ধি পাবে, রাজনীতির মাঠও চাঙ্গা হবে। সম্পাদনা: আজাদ হোসেন সুমন