মারজান বাশারুজ্জামান ও রাজীব গান্ধি ও মেজর জিয়া গ্রেফতার হলেই জঙ্গি মিশন শেষ
আজাদ হোসেন সুমন : গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জিম্মি অভিযানে সরাসরি অংশগ্রহনকারী ৫ জঙ্গি ঘটনার দিনই সেনা পরিচালিত অপারেশন ‘থান্ডারবোল্ট’ নিহত হয়েছে। এরপর এর মাস্টারমাইন্ড তামিম মেজর জাহিদুলসহ বেশ কয়েকজন পুলিশের কাউন্টার অ্যাটাকে নিহত হয়েছে। এই ঘটনার নেপথ্যে থাকা কমপক্ষে এক ডজন জঙ্গিকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে বেরিয়ে এসেছে গুলশান হামলার নেপথ্যে অর্থের যোগানের উৎস। নব্য জেএমবির পলাতক সংগঠক মারজান, বাশারুজ্জামান ও রাজীবগান্ধি ও মেজর জিয়াকে গ্রেফতার করতে পারলেই জঙ্গিদের বাংলাদেশ মিশন শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যতই দিন যাচ্ছে দেশে জঙ্গিবিরোধী ততই জোরালো হচ্ছে এবং জঙ্গিরা দিন দিন নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছে দাবি করে গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার সানোয়ার হোসেন বলেন, আমরা জঙ্গি দমনে এতটা সফল হব নিজেরাও ধারনা করতে পারিনি। জঙ্গিবিরোধী কাজ করতে গিয়ে লক্ষ্য করেছি যতই দিন যাচ্ছে আমরা ততই ভিতরে ঢুকছি। ফলে আমরা জঙ্গি দমনে সফলতার মুখ দেখতে পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, গুলশানে হলি আর্টিজানের ঘটনায় সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে ভাবমূর্তি ইতিমধ্যে পুনরুদ্ধার হয়ে গেছে বলে সবাই মনে করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর মতে, ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরায় জঙ্গি হামলার পরই র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দরা তৎপর হয়ে উঠে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানতে পারে। জঙ্গিরা বনানীতে একটি বাসা ভাড়া নিয়েছিল এবং আগারগাঁওয়ের কম্পিউটার মার্কেট থেকে ল্যাপটপ কেনে। সেই ল্যাপটপে গুলশান হামলার ছক আঁকে জঙ্গিরা। বনানীর ওই বাসার মালিককে গ্রেফতারের সূত্র ধরে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় জঙ্গিদের অবস্থানের সন্ধান পায় গোয়েন্দারা। এরপর জঙ্গিবিরোধী কম্বিং অপারেশনের এক পর্যায়ে কল্যানপুরে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ। সেখানে বন্দুকযুদ্ধে ৯ জঙ্গি নিহত হয় এবং আহত অবস্থায় গ্রেফতার করা হয় এক জঙ্গিকে তার কাছ থেকে পাওয়া যায় জঙ্গিওয়ার্ল্ডের অজানা বহু তথ্য। গোয়েন্দারা তথ্যের সূত্র ধরে অগ্রসর হওয়ার এক পর্যায়ে মিরপুরের রুপনগরে মেজর জাহিদুলের অবস্থানের খবর পায়। সেখানে পুলিশ অভিযান চালালে মেজর জাহিদের ছুরিকাঘাতে পল্লবী থানার ওসি ও ইন্সপেক্টর তদন্তসহ ৪ পুলিশ আহত হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশের গুলিতে মারা যায় মেজর জাহিদ। এরপর পুলিশ সোর্সের মাধ্যমে নারায়নগঞ্জের পাইকপাড়ায় মাস্টারমাইন্ড তামিমের অবস্থানের খবর পেয়ে অভিযান চালালে সেখানে তামিমসহ ৩ জঙ্গি নিহত হয়। আজিমপুরে জঙ্গি আস্তনায় পুলিশের অভিযানে জঙ্গিদের অর্থযোগানদাতা তানভীর কাদেরী নিহত হয়। এই আস্তানায় ৩ নারী জঙ্গিকে আহত অবস্থায় এবং তানভীর কাদেরীর ১৪ বছরের ছেলেকে গ্রেফতার গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকেও পাওয়া যায় জঙ্গি কার্যক্রমের যাবতীয়। সবশেষ একই দিন টাঙ্গাইল, গাজিপুর ও আশুলিয়ায় র্যাব পুলিশের অভিযানে ১২ জঙ্গি নিহত হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, জঙ্গিরা নাশকতার ছক আঁটছিল। কিন্তু পুলিশের প্ল্যান ছিল- যেখানেই জঙ্গি সেখানেই পুলিশ। পুলিশের এই ছকে জঙ্গিরা ধরাশায়ী। তার দাবি দেশ থেকে ৯৫ শতাংস জঙ্গি বিলীন হয়ে গেছে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম