চার বাম দলের নেতাদের প্রতিক্রিয়া বিশ্বব্যাংক সরকারের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে
রফিক আহমেদ : দেশের চার বাম দলের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, বিশ্বব্যাংক সরকারের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে- এটা সরকারের সফলতা। গতকাল বুধবার বাম দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের বিশেষ করে গার্মেন্ট শ্রমিক ও প্রবাসী শ্রমিকের রক্ত ঘামে বৈদেশিক মুদ্রার ভা-ার যত ফুলে ফেঁপে উঠেছে, ততই টাকার পাহাড় নিয়ে বসে থাকা বিভিন্ন মহল বাংলাদেশে ছুটে আসছে বিরতিহীনভাবে। কারণ বাংলাদেশের ঋনের সুদ পরিশোধ ও বাড়তি মুনাফা তুলে দেয়ার ক্ষমতা বেড়েছে বহুগুণ। যে কারণে এক সময় বিশ্ব ব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে চাপ প্রয়োগ করে যতটা নতিস্বীকার করাতে চেয়েছিল- এখন চাপ অনেক শিথিল করে হলেও বিনিয়োগ বাণিজ্য সুবিধা হারাতে নারাজ। তাছাড়া বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগের সঙ্গে মার্কিন ও প্রাশ্চাত্য শক্তি, স্বার্থ সরাসরি জড়িত। এক্ষেত্রে চীনের বিনিয়োগ জোয়ারের মতো ঢুকতে থাকলে পশ্চিমাদের শুধু আর্থিক স্বার্থই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। বিশ্ব ব্যাংকের আগমন এটা স্পষ্ট করে দুর্নীতির বিষয় সঠিক হলেও এটা তাদের মূখ্য বিষয় নয়। এটা হচ্ছে চাপ প্রযোগের অন্যতম একটি কৌশল। তাছাড়া বিশ্বব্যাংক প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল এবং আছে সরকারেরই একটা বাড়তি সুবিধা এই যে, ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু ২৮ হাজার কোটিতে নিয়ে গেলেও বলতে পারছে বিশ্বব্যাংক তাদের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। এটা সরকারের ক্ষমতা। বাস্তবে সার্বিক চিত্রের সবদিক ঘুরিয়ে কেউ দেখতে যাবে না। ফলে বিশ্বব্যাংকের স্বার্থ এবং সরকারের কৃতিত্ব দু’টোই রক্ষিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ বলেন, বিশ্বব্যাংকের ও বাংলাদেশের বড় নেতাদের নিশ্চয় কোনো মতলব আছে-এটা বুঝা খুবই মুশকিল। তারা তাদের স্বার্থে কোনো কোনো সময় বিরোধীতা করে, আবার কোনো সময় পক্ষে থাকে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশ সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া বলেন, বিশ্বব্যাংকের পদ্মা সেতু নিয়ে সরকারের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। কিন্তু সম্পর্ক নষ্ট করেনি সরকার। সার্বজনিন প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বব্যাংক তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে, অন্য খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে। এতে আমরা সফল।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বিশ্ব ব্যাংক বিরোধী অবস্থান নিয়েও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা করছে সরকার, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসা তারই বহিঃপ্রকাশ। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি