ডিজিটালাইজেশনের সঙ্গে সাইবার নিরাপত্তায় জোর দিচ্ছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটালাইজেশনের সঙ্গে সঙ্গে সাইবার নিরাপত্তা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আর্থিক খাত ও গোপনীয় বিষয়ের নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ডিজিটালাইজেশনের সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তাসংক্রান্ত কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক সম্মেলন সিটি, বসুন্ধরায় ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৬’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল সুবিধা ব্যবহার করে অপরাধ কার্যক্রম কেউ যাতে চালাতে না পারে সে জন্যই ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে জনসম্পদ তৈরি এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হবে। বিশেষ করে আর্থিক খাত এবং গোপনীয় বিষয়ের নিরাপত্তা যাতে কোনোভাবেই বিঘিœত না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এর আওতায় বাংলাদেশে বিশ্বমানের ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন, সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি গঠন, সাইবার ইন্সিডেন্স রেসপন্স টিম প্রতিষ্ঠা এবং উচ্চপর্যায়ের ডিজিটাল সিকিউরিটি কাউন্সিল গঠন করা হবে।
‘ননস্টপ বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ঢাকায় চতুর্থবারের মতো শুরু হয়েছে তিন দিনের তথ্যপ্রযুক্তির উৎসব ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড’। এতে দেশি-বিদেশি ও সরকারি ৪০০টি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
মেলায় মাইক্রোসফট, ফেসবুক, একসেন্সার, বিশ্বব্যাংক, জেডটিই, হুয়াওয়েসহ খ্যাতিমান তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ৪৩ জন বিদেশি বক্তা নিয়ে দুই শতাধিক ব্যক্তি বিভিন্ন পর্বে অংশ নেবেন। মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নেবেন সাত দেশের সাত মন্ত্রী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা দেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা কর্ম পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উড্ডয়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ২০১৭ সালে এর যাত্রা শুরুর পর নিজস্ব চাহিদা পূরণের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোতে স্যাটেলাইট ব্যান্ডউইডথ রপ্তানি করতে পারব।
আগামী বছরের মধ্যে চতুর্থ জেনারেশনের (ফোরজি) ইন্টারনেট সেবাও চালু করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা জানান, তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে তরুণ জনগোষ্ঠীর আউটসোর্সিং দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কসহ সারাদেশের আরও ২০টি হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ও আইটি ভিলেজ গড়ে তোলা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের বর্তমানের জনশক্তি দ্বিগুণ করে ২০২১ সালের মধ্যে ২০ লাখ করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। বর্তমানে দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের তথ্য-প্রযুক্তি পণ্য রপ্তানি বাড়িয়ে ২০২১ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন করার লক্ষ্যও রয়েছে।
তথ্য-প্রযুক্তি পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে ও দেশি কোম্পানিগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি মোস্তফা জব্বার। তিনি বলেন, সমমূলধন ও উদ্যোক্তা তহবিল (ইইএফ) থেকে আগে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে ঋণ দেওয়া হলেও গত একবছর ধরে তা বন্ধ আছে।
প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড উদ্বোধনের পর বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম