ব্যাংকে নয় হাতে হাতে লেনদেন করতো জঙ্গিরা
ইসমাঈল হুসাইন ইমু: জঙ্গিরা কোনো ব্যাংকে নয়, হাতে হাতে লেনদেন করতো। আর বিভিন্ন দেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে আসা এসব অর্থ সমন্বয় করতেন পুলিশের অভিযানে নিহত জঙ্গি তানভীর কাদরি। গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারির হামলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি কর্মকা- চালাতে নব্য জেএমবি অর্থের উৎসের বিষয়ে তদন্তে নেমে এমনটাই জানতে পেরেছে গোয়েন্দারা।
ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটি) সূত্রে জানা গেছে, এসব টাকার একটি অংশ বিদেশ থেকে অবৈধ পথে এলেও দেশের ভিতর থেকেও জঙ্গি কর্মকা- চালাতে অর্থ সরবরাহ করা হয়েছে। এরমধ্যে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকা থেকে দুই মেয়ে, জামাতা ও স্ত্রীসহ সিরিয়ায় পাড়ি জমানো ডা. রোকন ৮০ লাখ টাকা নব্য জেএমবির তহবিলে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে তথ্য পেয়েছেন সিটির কর্মকর্তারা।
একই সঙ্গে পৃথক দুই অভিযানে নিহত নব্য জেএমবির দুই শীর্ষ নেতা মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ও তানভীর কাদেরীও তাদের নিজেদের সঞ্চিত সব টাকা নব্য জেএমবির তহবিলে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। নব্য জেএমবির আর্থিক বিষয়গুলো দেখাশোনার কাজও করতেন নিহত তানভীর কাদেরী।
কাউন্টার টেরোজিম ইউনিটের কর্মকর্তারা বলেন, ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কানাডা থেকে দেশে এসেই নব্য জেএমবির সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি করে কার্যক্রম শুরু করে তামিম চৌধুরী। মূলত তামিম চৌধুরী নিজ উদ্যোগে বিদেশ থেকে কথিত জিহাদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন। গুলশান হামলার আগে তার নির্দেশনায় জঙ্গি বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট দুবাই থেকে আসা ১৪ লাখ টাকা সংগ্রহ করে। এছাড়া দেশের ভিতরে যারা নব্য জেএমবির কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত হয়, তাদের অনেকেই নব্য জেএমবির তহবিলে অর্থ দেয়।
সিটি সূত্র জানায়, গত ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরের একটি জঙ্গি আস্তানায় তানভীর কাদেরী নিহত হয়। ওই আস্তানা থেকে তানভীরের কিশোর ছেলে ও দুই নারী জঙ্গিসহ স্ত্রী আবেদাতুন ফাতেমা ওরফে খাদিজাকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে কিশোর ছেলে ও তার মা খাদিজা সিটির কর্মকর্তাদের জানিয়েছে, তাদের উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরে নিজেদের একটি ফ্ল্যাট ছিল। ওই ফ্ল্যাট বিক্রি করে প্রাপ্তঅর্থ ও সঞ্চিত অর্থ মিলে প্রায় ১ কোটি টাকা জেএমবির অর্থ তহবিলে জমা দেয়। জঙ্গিদের ভাষায়, তানভীর পুরো পরিবার নিয়ে কথিত হিজরত করার পর সংগঠনের তহবিল থেকেই তাদের দৈনন্দিন খরচ চালানো হতো। সম্পাদনা: রিকু আমির