আওয়ামী লীগের দাওয়াত নিয়ে হিসাব কষছেন তারেক রহমান
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আওয়ামী লীগের দাওয়াত দেওয়াকে রাজনৈতিক কৌশল হিসাবে বিবেচনা করছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আওয়ামী লীগ সৌজন্যতা রক্ষা ও লোক দেখানোর জন্য দাওয়াত দিয়েছে। আর বিএনপি এই দাওয়াতে না গেলে আওয়ামী লীগ বলবে আমরা বিএনপিকে দাওয়াত করেছি। যতবারই তাদেরকে আমরা ডেকেছি তারা প্রত্যাখ্যান করেছে। আসলে বিএনপি সমঝোতা চায় না। এই কারণে আওয়ামী লীগের আমন্ত্রণ তারা গ্রহণ করলেও আসে না। এতে করে আওয়ামী লীগ ও সরকার বিএনপির সমালোচনা করার সুযোগ পাবে। আর দাওয়াতে গেলেও এনিয়ে আওয়ামী লীগ বিএনপির উপর একহাত নিবে। এই কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন ও মহাসচিবকে দাওয়ার দেওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করার পাশাপাশি হিসাব নিকাশ করছেন। সরকারকে সমালোচনা না করতে পারে সেই কৌশল নিচ্ছে।
তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, তারেক রহমান মনে করছেন এই দাওয়াত দিয়ে তারা বিএনপিকে আরও একবার কোণঠাসা করতে চেয়েছে। জণগণকে বোঝাতে চাইছে ওই দাওয়াত দিয়েছে। বিএনপি না আসলে তাদের করার কিছুই নেই। তবে তারেক রহমান মনে করছেন এই দাওয়াতে বিএনপি চেয়ারপারসন ও মহাসচিব যোগ দিক এটা আওয়ামী লীগ চায়নি। চাইলে অন্তত সিনিয়র নেতাদের আমন্ত্রণ জানাতে পারতো। ম্যাডাম একা কোথাও যান না। সেখানে তাকে একলা দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য নেতাদের দাওয়াত দিলে খালেদা জিয়া বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করতে পারতেন। কিন্তু সেই ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সূত্র লন্ডনে থেকে জানান, বিএনপিকে আওয়ামী লীগ অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের চেয়ে আলাদা করে দেখে না। অন্য দল আর বিএনপিকে এক কাতারেই বিবেচনা করা হয়েছে, মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই জন্য অন্যান্য পার্টির মতো কেবল দুইজনকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগও জানে যে এই রকমভাবে দাওয়াত দিলে ম্যাডাম যাবেন না। আর ম্যাডাম না গেলে মির্জা ফখরুল একা যাবেন না। তবে দাওয়াত দেওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগ যে রাজনীতি করেছে এর পাল্টা রাজনীতি করার কথা চিন্তা করছেন তারেক রহমান। সেই হিসাবে তিনি তার মায়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। সূত্র জানায়, ওই দাওয়াতে গেলে বিএনপির জন্য রাজনৈতিকভাবে বিভিন্ন সমস্যা হবে। কারণ যেখানে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল করার জন্য সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। বিএনপি কাউন্সিল করার আগে এই ধরনের কোনো সুবিধা পায়নি। সরকার অনুমতিও দেয়নি। শেষ মুহূর্তে সীমিত পরিসরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে সম্মেলন করেছে। বিএনপির সম্মেলনে জায়গার অভাবে অনেক ব্যবস্থা হয়েছে। স্থান আগে না পাওয়ায় তারা মেহমানদের ও কাউন্সিলরদের যথাযথ সম্মান দিতে পারেনি। এনিয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের উপর ক্ষোভ রয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগকে কাউন্সিলে যোগ দেওয়ার জন্য দাওয়াত দিয়েছিলো। কিন্তু আওয়ামী লীগের কেউ কাউন্সিলে যায়নি। কোনো প্রতিনিধিও পাঠানো হয়নি।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ যাতে এই দাওয়াত নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো প্রচারণা না চালায় সেই জন্য বিএনপি এই ব্যাপারে কথা বলবে। তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধির কাছ থেকে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ আশা করে বিএনপি তাদের কাউন্সিলে যোগ দিবে। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী